সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে বালু উত্তোলনের কারণে হুমকির মুখে পড়ছে কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাধ। এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর গত (১৭ আগস্ট) সারজিল সম্পদ একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের রতনকান্দি হাটের উত্তরপাশে এবং কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের তারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠের পাশে বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাধে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, কাজিপুর উপজেলার পূর্ব পাশে যমুনা নদী। রাক্ষুসী যমুনার ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রতিবছর সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এরপরও ভাঙন বন্ধ হচ্ছে না। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যানিয়ন্ত্রণ বাধের কাছে ড্রেজার (খননযন্ত্র) বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এবং বন্যানিয়ন্ত্রণ বাধের ওপর দিয়ে পাইপ টানিয়ে পাশেই বালুর স্তুপ করে বালু বিক্রি করছে। এতে নদীর তীর সংরক্ষণ বাধ হুমকির মুখে পড়েছে। বালু উত্তোলনে কারণে আশপাশের বাড়িঘরে পানি উঠেছে।
পানি বন্ধি মনজেল আলী, ইউসুফ আলী, বাবু সেখ, শান্তি, শারমিন খাতুন, আকলিমা বেগমসহ ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। আমাদের জানা মতে এই যমুনা নদীতে সরকারি কোন বালু মহাল নেই। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। বালু উত্তোলনকারী ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পান না। আমরা এখন বিপদে আছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বালু তোলা বন্ধ না হলে আমরা আর কেউ বাড়িতে থাকতে পারবো না।
বালু উত্তোলন (ছবি : দৈনিক অধিকার)
অপরদিকে দেখা যায়, বালু উত্তোলনের ফলে উপজেলার তারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠসহ এলাকার ফসলি জমির ধান, মুরগির ফার্মসহ ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। এলাকাবাসী এ ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান খোকা জানান, বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমি রতনকান্দি ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আলী হোসেন, মুকল সেখ গংদের অনেকবার নিষেধ করেছি। কিন্তু তারা আমার কোন কথা শোনেনি।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন জানান, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাধের কাছে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে স্থানীয় লোকজন আমার নিকট অভিযোগ করেছে। তিনি আরও বলেন, বালু উত্তোলনের কারণে স্থানীয় জনসাধারণের সদস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে অনেকেরে বাড়িঘর, মুরগির ফার্মসহ স্থানীয় স্কুলে পানি ঢোকায় পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে জীবনযাপন করছে। আমি বন্যানিয়ন্ত্রণ বাধের ওপর বালু উত্তোলনের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসান সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। যদি কেউ যমুনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, এ বিষয় আমি অবগত নই। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি আমি দেখছি।
আরও পড়ুন : পরিচয় মিলেছে বেনাপোলে পাওয়া আজ্ঞাত লাশের
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।
ওডি/এফই
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড