ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের তেঁতুল বাড়িয়া গ্রামে স্থানীয় কৃষক মোস্তফা মোল্লার পুত্র সোলায়মান সোহাগ (২৭) নিজ শয়ন কক্ষের আড়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় গত ১৭ জুলাই নলছিটি থানায় অপমৃত্যু মামলা ও ১আগস্ট ঝালকাঠি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। একই ঘটনায় দ্বিমুখী মামলা হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৭ জুলাই নলছটি উপজেলার তেতুলবাড়িয়া গ্রামে স্থানীয় কৃষক মোস্তফা মোল্লার পুত্র সোলায় মান সোহাগ রাত আনুমানিক ৯টায় সময় একাকি ঘরের ভিতরে শয়নকক্ষের আড়ার সাথে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে মোস্তফা মোল্লা শয়নকক্ষে গিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে ফাঁস লাগানো রশি কেটে ঘরের মেঝেতে রাখেন। নলছিটি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রশি কাটা শোয়া অবস্থায় সুরতহাল করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে। মোস্তফা মোল্লা বাদী হয়ে থানার অপমৃত্যু মামলা করেন। সেই মামলা তার মতের বিরুদ্ধে হয়েছে বলে দাবী করে পরবর্তিতে আদালতের দায়ের করা হত্যা মামলায় এ অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালত মামলার তদন্তকরে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন । নলছিটি থানা পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায় মামলাটি রুজু করার পরে সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হলে উক্ত হাসপাতালে ডাক্তার মোহাম্মদ হাসিবুর রহমান অয়ন মুত্যুর ময়নাতদন্ত শেষে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ভিসারা সংরক্ষণ করে ঢাকাস্থ মহাখালীতে বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি রাসায়নিক পরীক্ষাগারে প্রেরণ করেন। বাদী মোস্তফা মোল্লা রাসায়নিক রিপোর্ট অপেক্ষা না করে ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় চৌকিদার হারুন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ঘটনার সময় রাত ১০টার দিকে ডাকচিৎকার শুনে মোস্তফা মোল্লার বাড়ি গিয়ে সোহাগকে উত্তরদিকে মাথা রাখা অবস্থায় মাটিতে শুয়ে রাখা হয়েছে দেখতে পাই। তার হাত বাকানো অর্ধেক রশি গলায় ফাঁস সহ অর্ধেক আড়ার সাথে আটকানো ছিলো। এর কিছুক্ষন পর মোল্লারহাট ফাড়ির পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল করে। ফাঁস দেয়া রশি কাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মৃত্যুর পর রশি কেটে নিচে নামিয়েছেন বলে প্রকাশ্যে পুলিশসহ সবাইকে জানান। ওসময় ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেছে বলে পুলিশের সামনে কেউ স্বীকার করেনি। ছেলের মৃতদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পিতাই লাশ নামিয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হলেও বর্তমানে পূর্বের বিরোধিতা থাকায় আদালতে আবার মামলা হয়েছে। ইউনিয়র আনসার কমান্ডার মোশাররফ হোসেন, পূর্ব থেকেই সোলায়মান মানসিক রোগী ছিল বিধায় তার স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিবাহ করেছেন। ওর চিকিৎসার জন্য বরিশাল মানসিক রোগ হাসপাতালে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুপারিশ করে প্রত্যয়নপত্র দিয়ে ছিলেন।
এলাকার বাসিন্দাদের নিকট জানতে চাইলে তারা জানান, আমরা কিছু বলবো না আপন ভাইকেই আসামী করা হয়েছে আমরা ভয়ে আছি কখন আমিই আসামী হই। পুলিশ ভালোভাবে তদন্ত করলে আসল ঘটনা জানতে পারবে।
মোস্তফা মোল্লা জানান, রাতে খবর শুনে ঘরে গিয়ে দেখি পুত্র তার শয়ন কক্ষে আড়ার সাথে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে। বেঁচে আছে কি না তা দেখতেই ফাঁস কেটে নামিয়েছি। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে। এরপরে পুলিশ এসে সুরতহাল করেছে।
ওডি/
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড