সারাদেশ ডেস্ক
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় স্বামীর পরকীয়া প্রেম ও নির্যাতন সইতে না পেরে তাসলিমা খাতুন (২৫) নামে এক গৃহবধূ বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। নিহত তাসলিমা খাতুন উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী লিখন মিয়ার স্ত্রী।
এদিকে পুলিশকে না জানিয়ে তাসলিমার মৃতদেহ দাফনের চেষ্টা করেন তার স্বজনরা। মৃত্যুর ২১ ঘণ্টা পর শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে সংবাদ পেয়ে নিহতের মৃতদেহ তার বাবার বাড়ি থেকে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, ধুনট উপজেলার গোপালনগর গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে লিখন মিয়া প্রায় ৬ বছর আগে শেরপুর উপজেলার বরইতলী গ্রামের তছির উদ্দিনের মেয়ে তাসলিমা খাতুনকে বিয়ে করে। লিখন মিয়া সৌদি আরবে চাকরি করতো। কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে দুই মাস ধরে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করছে লিখন। এ অবস্থায় প্রতিবেশী এক নারীর সাথে লিখনের পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি টের পায় তাসলিমা।
এ বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তাসলিমাকে তার স্বামী নির্যাতন করে। স্বামীর পরকীয় প্রেম ও নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামীর ঘরে বিষপান করে তাসলিমা। তাকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাসলিমাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক।
বগুড়া হাসপাতালে নেওয়ার পথে ধুনট-শেরপুর সড়কের শালফা এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাসলিমা মারা যায়। মৃত্যুস্থলের পাশের বরইতলী গ্রামের বাবার বাড়িতে তাসলিমার মৃতদেহ নেওয়া হয়। সেখানে লিখনের পরিবারের সাথে দেনদরবার করে ৫ লাখ টাকা তাসলিমার বাবাকে এবং ৪ বিঘা জমি তাসলিমার দুই ছেলের নামে লিখে দেওয়ার শর্তে মিমাংসা করে তাসলিমার মৃতদেহ দাফনের সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে লিখন মিয়া বলেন, পারিবারিক অশান্তির কারণে তাসলিমা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৫ লাখ টাকা ও ৪ বিঘা জমি লিখে দেওয়ার কথা হয়েছে।
ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিপন কুমার বলেন, বিষক্রিয়ায় অসুস্থ তাসলিমাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনেন তার স্বজনরা। কিন্ত তার শরীরের অবস্থা ক্রমেই অবণতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, তসলিমার আত্মহত্যার বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জানানো হয়নি। তবে সংবাদ পেয়ে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ঘটনাস্থলে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, এ বিষয়টি উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়নি। তারপরও এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড