• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বগুড়ায় মোকামেই চালের বাজারে অস্থিরতা

  সারাদেশ ডেস্ক

২৪ ডিসেম্বর ২০২০, ২০:৪০
ছবি : সংগৃহীত

চালের মোকামেই চালের দাম বেশি। আর নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়িয়ে কেনাবেচা হলেও বাজার মনিটরিং করছে না কেউ। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়তে বাড়তে এখন সাধারণ মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি। অথচ বগুড়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলনের পরেও চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ হতাশ হয়ে পড়েছে। করোনাকালে নিম্ন আয়ের মানুষের রোজগার কমে গেলেও চালের পাশাপাশি দাম বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ধান চাষ ও চাল উৎপাদনে বগুড়া একটি অন্যতম জেলা। সে কারণে বগুড়াকে এখন চালের মোকাম বলা হয়। বগুড়ায় চালের মোকামে দাম বেড়ে গেলে এর প্রভাব সবখানেই পড়ে। জেলায় এবার আমনের ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে। তারপরেও জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১লাখ ৭৬ হাজার ৪৩৫ হেক্টর। আর চাল আকারে ফলন ধরা হয় ৫ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৪ মেট্রিক টন। সেখানে প্রায় পৌনে ছয় লাখ মেট্রিক টন ফলন হয়েছে।

বগুড়া জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েক দফায় বিভিন্ন প্রকার চালের দাম প্রতি কেজি গড়ে ৮ থেকে ১২ টাকা বেড়ে গেছে। এখন খোলা বাজারে সর্বনিম্ন মোটা চাল ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা এবং চিকন চাল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ধান ও চালের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় সরকারের চলমান আমন মৌসুমে ধান চাল ক্রয় অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।

বগুড়ার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রনজিৎ ও বিআর-২৯ চাল ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা, স্বর্না চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, মিনিকেট চাল ৬০ টাকা, নাজির শাইল চাল ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, পাইজাম চাল ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা, কাটারী (স্থানীয়) চাল ৫৮-৬০ টাকা এবং কাটারী চাল (উন্নত) ৬৪-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগেও কেজি প্রতি চালের দাম ৮ থেকে ১২ টাকা কম ছিল।

বগুড়ার চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে চালের দাম বাড়ছে। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড শীতের কারণে চাতালে ধান শুকাতে সমস্যার কারণে বাজারে চাল সরবরাহ কমে যাওয়ায় চালের বাজার বেড়েছে।

এদিকে, বাজারে ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারের অভ্যন্তরীন আমণ সংগ্রহ অভিযানও ব্যহত হচ্ছে। সরকারি খাদ্য গুদামে ধানের দাম ২৬ টাকা কেজি হিসেবে ১০৪০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বাজারে ধানের দাম ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে সরকারি খাদ্য গুদামে ৩৭ টাকা কেজি দরে যে চাল কেনা হচ্ছে সেই চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৭ টাকা কেজি। একারনে খাদ্য গুদামের সাথে চুক্তিবদ্ধ মিলারগণ ধান-চাল দিতে অনাগ্রহী।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে মিল মালিকদের নিকট থেকে ৪৮ হাজার ২৪১ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, এক হাজার ৯৯১ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং কৃষকদের নিকট থেকে ১১ হাজার ৭৯২ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর বগুড়ায় অভ্যন্তরীন খাদ্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হলেও বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় মিলারগণ খাদ্য গুদামে ধান চাল দিচ্ছেন না।

বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে ধান চালের মুল্য বেশি। এ কারণে মিলাররা সরকারের সাথে চুক্তি করলেও চাল দিচ্ছেন না। একই কারণে তালিকাভুক্ত কৃষকরাও ধান দিচ্ছেন না। এ পর্যন্ত বগুড়ায় মাত্র ১৫ মেট্রিক টন ধান, ১ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে। ফলে বোরো মওসুমের মতো আমন মওসুমেও সরকারের অভ্যন্তরীন খাদ্য সংগ্রহ অভিযান সফল না হওয়ার অশংকা রয়েছে।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার যমুনা সেমি অটোরাইস মিলের স্বত্ত্বাধিকারি আইয়ুব আলী জানান, শীতের কারণে ধান শুকানো যাচ্ছে না। কুয়াশার পরিমাণ বেশি থাকায় সূর্যের আলোতে উত্তাপ থাকছে কম। সে কারণে চাহিদা মত চাল সরবরাহ করা যাচ্ছে না।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড