• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঐতিহাসিক কলারোয়ায় মুক্ত দিবস আজ

  সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

০৬ ডিসেম্বর ২০২০, ১৭:৩৯
কলারোয়া

আজ ৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক কলারোয়া মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিনে সাতক্ষীরার কলারোয়া এলাকা পাক হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। কলারোয়া উপজেলার আকাশে উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুক্তিকামী মানুষের উল্লাসে মুখরিত হয় পাকবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞে ক্ষত-বিক্ষত কলারোয়া।

মহান মুক্তিযুদ্ধে কলারোয়ার ৩৪৩ জন বীর সন্তান অংশ নেন। এরমধ্যে শহীদ হন ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। কলারোয়া অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন প্রবাসী সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি সংস্থা।

কলারোয়া এলাকা ছিল মুক্তিযুদ্ধে ৮নং সেক্টরের অধীনে। কলারোয়া এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণে সর্বপ্রথমে শহীদ হন উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের আফছার আলী সরদার। এরপর এপ্রিলে পাকবাহিনী কলারোয়ার পালপাড়ায় হামলা চালিয়ে গুলি করে হত্যা করে ৯ জনকে।

পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ পরিচালনা করেন-কলারোয়ার দুই বীর যোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন ও আব্দুল গফফার। এসময় সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে সংঘটিত এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৬ শতাধিক পাকসেনা নিহত হয়। কলারোয়ায় পাকসেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকটি বড় ধরনের সম্মুখযুদ্ধ হয়। এরমধ্যে ১৮ সেপ্টেম্বরের বালিয়াডাঙ্গা যুদ্ধ উল্লেখযোগ্য।

এ যুদ্ধে ২৯ জন পাকসেনা নিহত হয়। শহীদ হন ১৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এছাড়া ১৭ সেপ্টেম্বর কাঁকডাঙ্গার যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে পাকসেনারা কাঁকডাঙ্গা ঘাঁটি ছাড়তে বাধ্য হয়। এর আগে ২৭ আগস্ট সমগ্র চন্দনপুর এলাকা পাকবাহিনী মুক্ত হয়। অক্টোবরের শেষ দিকে মুক্তিযোদ্ধারা কলারোয়ার পার্শ্ববর্তী বাগআঁচড়ায় দুঃসাহসিক হামলা চালিয়ে ৭ জন পাক রেঞ্জারকে হত্যা করেন। খোরদো এলাকাও বীরযোদ্ধারা মুক্ত করে ফেলেন।

কলারোয়ার বীর যোদ্ধাদের ধারাবাহিক সফল অপারেশনের মুখে কোনঠাসা হয়ে পড়ে পাক বাহিনী। তারা যখন বুঝতে পারলো যে তাদের পরাজয় নিশ্চিত, তখন তারা ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর চেষ্টা করে। এরই অংশ হিসেবে ৫ ডিসেম্বর রাত ১২ টা ১ মিনিটে কলারোয়ার বেত্রবতী নদীর লোহার ব্রিজ মাইন বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়ে পাকসেনারা পালিয়ে যায়।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বিজয়ী মুক্তিযোদ্ধারা নৌকাযোগে নদী পার হয়ে এসে কলারোয়া বাজার নিয়ন্ত্রণে আনে। সময় তখন ভোর ৫টা ১৫ মিনিট। এভাবে এক একটি সকল অপারেশনের মধ্য দিয়ে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর কবল থেকে কলারোয়ার মাটিকে মুক্ত করেছিলেন আজকের এ দিনে।

কলারোয়া থানায় পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে স্বাধীন দেশের পতাকা উড়ান মুক্তিকামী বীরযোদ্ধা ও জনতারা। শুধু মুক্তিযোদ্ধারা নন, কলারোয়ার অনেক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকদের কথা মানুষের স্মৃতিপটে আজ অমলিন। তাঁরা হলেন-সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রয়াত মমতাজ আহমেদ, তাঁর ভাই শহীদ এসএম এন্তাজ আলি, স্বর্গীয় শ্যামাপদ শেঠ, ভাষা সৈনিক প্রয়াত শেখ আমানুল্লাহ, বিএম নজরুল ইসলাম সাবেকসহ আরো অনেকেই।

ঐতিহাসিক ও গৌরবোজ্জ্বল দিনটি এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ও কলারোয়ার বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড