• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

করোনাকালে এক মাদরাসার ২০ ছাত্রীর বাল্যবিয়ে

  যশোর প্রতিনিধি

০১ ডিসেম্বর ২০২০, ১৯:৩১
বাল্যবিয়ে
ছবি : প্রতীকী

করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যশোরের মণিরামপুরে দাখিল মাদরাসার ২০ ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির দুইজন, সপ্তম শ্রেণির চারজন, অষ্টম শ্রেণির ছয়জন, নবম ও দশম শ্রেণির চারজন করে শিক্ষার্থী রয়েছে। গত দশ মাসে উপজেলার পাড়িয়ালি আদর্শ বালিকা দাখিল মাদরাসার ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিয়ের শিকার হয়।

মাদরাসাটির সহকারী শিক্ষকরা জানান, করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে মাদরাসা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অসচেতন অভিভাবকরা মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়ে যান। বাড়িতে বিয়ে দিলে সমস্যা হবে ভেবে তারা বাইরের এলাকায় নিরাপদ স্থানে নিয়ে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। করোনার মধ্যে প্রতিষ্ঠানের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০জন ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে বলে জানান তারা।

মাদরাসার শিক্ষক অম্বরীশ রায় বলেন, আমাদের দশম শ্রেণির ঋতু নামে এক ছাত্রীকে স্বজনরা পুলেরহাট এলাকায় আত্মীয়র বাড়িতে নিয়ে বিয়ে দিয়েছেন। বাইরের এলাকায় হওয়ায় আমরা খবর পেয়েও কিছু করতে পারিনি।

মাদরাসার সুপার আব্দুল হালিম বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক স্তরে ১৫০জন ছাত্রী রয়েছে। করোনার বন্ধে কয়েক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যাওয়ার খবর টুকটাক পাচ্ছিলাম। আমরা প্রতিষ্ঠানে নেই বলে খবর নিতে পারিনি। গত পহেলা নভেম্বর অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়ার জন্য মাদরাসা খোলা হয়। এরপর কয়েকজন ছাত্রী না আসায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তখন খোঁজ নিয়ে দেখি ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ২০ জনের বিয়ে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আগে কয়েকবার ছাত্রীদের বাল্য বিয়ের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি। থানা থেকে পুলিশ এনে এক ছাত্রীর বিয়ে বন্ধ করেছি। কিন্তু পরে আবার অভিভাবকরা বাইরের এলাকায় নিয়ে গোপনে তাদের বিয়ে দিয়েছেন। তাই করোনার বন্ধে ছাত্রীদের বিয়ের বিষয়টি প্রশাসনকে জানাইনি।’

মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, করোনার বন্ধে কতজন ছাত্রী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে তেমন কোন তথ্য কোন প্রতিষ্ঠান প্রধানরা আমাদের জানাননি। এই ব্যাপারে কোন তথ্য আমার কাছে নেই।

মণিরামপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমি আক্তার বলেন, গত ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া থেকে পহেলা ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা ১৭টি বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে সবগুলো বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু পাড়িয়ালি বালিকা দাখিল মাদরাসার ছাত্রীদের বিয়ের ব্যাপারে মাদরাসার সুপার আমাদের কোন খবর দেননি। যে কারণে ওই বিয়েগুলো ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড