• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মা-বাবাকে মেরে হাসপাতালে পাঠাল মেয়ে-জামাই

  সারাদেশ ডেস্ক

২০ নভেম্বর ২০২০, ১০:৩৩
আবদুস সোবহান ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম
হাসপাতালে শিক্ষক আবদুস সোবহান ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম (ছবি : সংগৃহীত)

বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে পুলিশের উপস্থিতিতেই মা-বাবাকে মেরে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে মেয়ে ও জামাতার বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সময় ডিবি পুলিশের দুজন কর্মকর্তাসহ চারজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তবে পুলিশের দাবি, এমন ঘটনা অফিসে নয়; ঘটেছে অফিসের সামনে।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন- বরগুনা সদর উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুস সোবহান ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম। তাদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আবদুস সোবহানের ছেলে জসীম উদ্দীন বলেন, ‘বাবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। ২০১৬ সালের জুন মাসে তিনি অবসরে যান। পরের বছর পেনশনের টাকা উত্তোলন করে ডাকবিভাগে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখেন। পেনশনের টাকা পাওয়ার পর থেকেই বোন সীমা আক্তার এক লাখ টাকা দাবি করতে থাকে এবং বিভিন্ন সময় বাবাকে হয়রানি করতে শুরু করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সবশেষ গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আমি ও আমার বাবা এবং মায়ের কাছে টাকা পাবে- মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ করে। পরে ডিবি পুলিশ গিয়ে আমার বাবাকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসে। এরপর স্থানীয় আইনজীবী শফিকুল ইসলাম মজিদ সীমাকে চার শতাংশ জমির মূল্যবাবদ ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে মুচলেকা দিয়ে বাবাকে ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়িয়ে আনেন। এ টাকা নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখের মধ্যে পরিশোধের কথা ছিল।’

‘কিন্তু সীমা ৬০ হাজার টাকার পরিবর্তে এক লাখ টাকা দাবি করতে থাকে। এ নিয়ে ফের বিরোধ শুরু হয়। একপর্যায়ে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ডিবির এএসআই মিজানুর রহমান ফের বাবাকে ধরতে আমাদের বাড়িতে আসেন। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার সন্ধ্যায় আইনজীবী আবদুল মজিদের চেম্বারে দেখা করতে যান বাবা। সেখান থেকে ফেরার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এএসআই মিজান বাবাকে ধরে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।’

জসীম উদ্দীন আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে আইনজীবী মজিদ ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে সমঝোতার বৈঠক নির্ধারণ করেন। ডিবি কার্যালয়ে উভয়পক্ষ সমঝোতার জন্য বসেন। এসআই আশরাফ, সুশীল ও এএসআই মিজানসহ ডিবির চার-পাঁচজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সীমা এক লাখ টাকার দাবিতে অনড় থাকায় সমঝোতা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে ডিবি কার্যালয়ের ভেতরেই সীমা ও তার স্বামী হাফিজুর রহমান বাবা-মাকে মারধর শুরু করে। তারা মায়ের কাছে থাকা ৬০ হাজার টাকার ব্যাগ কেড়ে নেয়। পরে মা-বাবাকে উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’

এ বিষয়ে আইনজীবী আবদুল মজিদ বলেন, ‘বুধবার রাতে আবদুস সোবহানকে হেনস্তা করে ডিবির এএসআই মিজান কার্যালয়ে ধরে নিয়ে যায়। আমি গিয়ে ছাড়িয়ে আনি। ঘটনাটি ডিবি কার্যালয়ের ভেতরে। আমরা সীমা ও তার স্বামীর হাত থেকে সোবহান ও তার স্ত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করি। অথচ ডিবি পুলিশের সদস্যরা তখন ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন।’

আরও পড়ুন : তক্ষক কিনতে এসে অপহরণ, বছর বাদে জঙ্গলে মিলল লাশ

এ বিষয়ে ডিবির এএসআই মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘সীমার অভিযোগটি দেখার জন্য এসআই আশরাফ স্যারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি আমতলীতে থাকায় ওসি স্যার আবদুস সোবহানকে ডেকে আনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। বুধবার দুপুরে আমি তাদের বাড়িতে গিয়ে পাইনি, পরে ওনার স্বজনদের অনুরোধ করে আসি যাতে উনি বৃহস্পতিবার ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হন। বৃহস্পতিবার রাতে আমি স্টেডিয়াম এলাকা থেকে বৈঠকের তারিখ নিশ্চিত করার জন্য তাকে ডেকে নিয়ে এসেছিলাম।’

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-ডিবি) জাকির হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘কার্যালয়ের ভেতরে নয়, বাইরে বাবা-মা ও মেয়ের সাথে সামান্য ঝামেলা হয়েছে।’

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড