• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তক্ষক কিনতে এসে অপহরণ, বছর বাদে জঙ্গলে মিলল লাশ

  জেলা প্রতিনিধি

২০ নভেম্বর ২০২০, ০৯:৩৫
লাশ উদ্ধার
গহীন জঙ্গল থেকে হেলালের গলিত লাশ উদ্ধার (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কোটি টাকার তক্ষক বিক্রির লোভ দেখিয়ে চাঁদপুর মতলব থানা এলাকার এনজিও কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনকে অপহরণের এক বছর পর তার গলিত লাশ মিলেছে। ফটিকছড়ি ভূজপুর থানার বাগানবাজার এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী বাগানবাজার ইউপির নুরপুরের গহীন জঙ্গল থেকে দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টা চেষ্টার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি টিম হেলালের গলিত লাশটি উদ্ধার করে।

এর আগে অপহরণের সাথে জড়িত বিল্লাল নামে একজনকে রামগড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে গতকাল রাতে বাগানবাজার ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের নুরপুর গহীন জঙ্গল থেকে পিবিআই টিম লাশ পুঁতে ফেলার স্থানটি সনাক্ত করে।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, তথাকথিত কোটি টাকা মূল্যের তক্ষক নামমাত্র মূল্যে বিক্রির নাম করে গত বছরের ২৩ নভেম্বর বাবুল সিকদার (৪২) নামে এক ঠিকাদার ও এনজিও সংস্থা সেতু বন্ধনের ঢাকা মুগদাপাড়া শাখার ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন (৪৩)কে কৌশলে বাগানবাজারে এনে অপহরণ করা হয়।

তারা জানান, অপহরণকারীরা তাদের পরিবারের কাছে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। কয়েকদিনের মাথায় অপহরণকারীরা বাবুলকে মুক্তি দিলেও অপর এনজিও কর্মকর্তা হেলালকে অপহরণের পর তাকে হত্যা করে সংঘবদ্ধ চক্রটি। এমনকি হত্যার পর লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছিলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী দুর্গম পাহাড়ি এই অঞ্চলটির ৫০ ফুট গভীর গর্তে। এরপর প্রায় ৫ ফুটের মত মাটি দিয়ে চাপা দেওয়া হয়।

পিবিআই কর্মকর্তারা বলেন, গত বছর ৬ ডিসেম্বর নিহত এনজিও কর্মকর্তা হেলালের ২য় স্ত্রী কানিজ ফাতেমা পিংকি বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে ভূজপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। পরে মামলাটি এ বছর মার্চে পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। এরপর অধিকতর তদন্তে নামে তারা।

হত্যাকাণ্ডের পর এক বছরের মাথায় জড়িত একজনকে পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় আটকের পর বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ছদ্মবেশ ধারণ করে লালমাই এলাকার বিল্লাল নামের একজনকে আটক করে পিবিআই। তাদের সহযোগীতা করে দাতঁমারা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। এস্কেভেটরের সাহায্যে ৬ ঘণ্টা কাটা হয় মাটি। এরপর লাশের সন্ধানে পরিত্যক্ত কুপটিতে নামানো হয় স্থানীয় শ্রমিকদের। দীর্ঘক্ষণ মাটি খুড়ার পর হেলালের জামা কাপড় পরিহিত লাশের সন্ধান পায় তদন্ত দল। এ সময় হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী, ছেলে ও অন্যান্য আত্নীয় স্বজনরা লাশ সনাক্ত করেন।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম অঞ্চলের (পিবিআই) পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, আটককৃত বিল্লাল স্বীকার করেছে যে তারা ১০-১২ জন মিলে এ হত্যাকাণ্ড করেছে এবং তারা লাশটি ৫০ফুট নিচের গর্তে লাশটি ফেলে দেয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আতিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, জায়গাটা দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল এখানে আশেপাশে কোন লোক বসবাস করেনা। তাই চক্রটি জায়গাটি বেঁচে নিয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী রামগড়-বাগানবাজার এবং হেঁয়াকোর গহীন জঙ্গলে বিপুল পরিমাণ তক্ষকের বাস রয়েছে। এর কোনো আর্থিক মূল্য না থাকলেও বিভিন্ন গুজব রটিয়ে একটি চক্র সাধারণ মানুষকে এখানে এনে জিম্মি করে রাখতো। যাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ পাওয়া যেত না তাদের হত্যা করে জঙ্গলে লাশ গুম করা হতো।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড