চন্দনাইশ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় সাবিদুল ইসলাম সাজ্জাদ (২৪) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) ময়না তদন্ত শেষে এশার নামাজের পর তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের বিওসির মোড় এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
সাজ্জাদ চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার বারুদখানা এলাকার মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে। সে গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র।
অপরদিকে হত্যায় অভিযুক্ত যুবক রবিউল ইসলাম (১৮) কালিয়াইশ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কাটগড় নয়াপাড়া এলাকার মৃত ইসলাম মিয়ার ছেলে।
সাজ্জাদের বড় ভাই হেলাল মাহমুদ জানান, শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকালে বান্দরবান জেলার সুয়ালক মাঝর পাড়ায় অনুষ্ঠিত পূর্ণিমা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ‘দোহাজারী ফ্রেন্ডশিপ ফুটবল একাদশের’ সাথে ‘কেরানিহাট ফুটবল একাদশের’ সেমিফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সাজ্জাদ ছিল দোহাজারী ফ্রেন্ডশিপ ফুটবল একাদশের দলীয় অধিনায়ক। খেলার খরচ যোগাড় করতে এলাকার বিত্তশালীদের কাছে আর্থিক সহযোগিতা চায় দোহাজারী ফ্রেন্ডশিপ ফুটবল একাদশের খেলোয়াড়েরা। এরই অংশ হিসেবে কালিয়াইশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ আহমদের কাছেও আর্থিক অনুদান চান তারা।
পরে হাফেজ চেয়ারম্যান তাদের বৃহস্পতিবার রাতে তার বাসভবনে দেখা করার জন্য বলেন। চেয়ারম্যানের সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার রাতে এশার নামাজের পর রিকশাযোগে সাজ্জাদ ও তার দলের কয়েকজন খেলোয়াড় বিওসি’র মোড় পৌঁছলে সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কাটগড় নয়াপাড়া এলাকার মৃত ইসলাম মিয়া ড্রাইভারের ছেলে রবিউল সাজ্জাদ ও তার সঙ্গীদের গতিরোধ করে ব্যক্তিগত কথা আছে বলে সাজ্জাদকে বন্ধুদের থেকে পৃথক করে কিছুটা দূরে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রবিউল তার কোমরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সাজ্জাদের বুক ও মাথাসহ শরীরের কয়েক স্থানে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়।
পরে সাজ্জাদ আত্মচিৎকার দিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে স্থানীয়রাসহ সাজ্জাদের অন্য সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দোহাজারী গ্রীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক সাজ্জাদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করলে পথে পটিয়া এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
এ দিকে খবর পেয়ে দোহাজারী তদন্ত কেন্দ্রের আইসি পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল হালিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বিষয়টি সাতকানিয়া থানাকে অবহিত করেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) হাসানুজ্জামান মোল্যা ও সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এলাকাবাসীর বক্তব্য শুনেন। এরপর ঘাতক রবিউলের মা শাহানা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেওয়া হয়। পরে ঘাতক রবিউলের আত্মীয়-স্বজনদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে শুক্রবার সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘খুনি রবিউলকে গ্রেপ্তারের জন্য সম্ভাব্য সব জায়গায় সোর্স লাগানো হয়েছে। পটিয়া থানা লাশ ময়না তদন্তের ব্যবস্থা নেবে। নিহতের স্বজনদের মামলা দায়েরের জন্য বলা হয়েছে। নিহতের জানাজা শেষে সাজ্জাদের স্বজনেরা মামলা দায়ের করবে বলে জানিয়েছে। মামলা রুজু হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন : হাসপাতালে রিমান্ডে থাকা এসআই আকবর
এ দিকে ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) এশার নামাজের পর দোহাজারী পৌরসভার বোটঘাটা এলাকায় সাজ্জাদের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে দোহাজারী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। সাজ্জাদের মৃত্যুতে ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তবে কি কারণে ঘাতক রবিউল সাজ্জাদকে খুন করেছে সে বিষয়ে কারও কাছ থেকে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড