হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট
লালমনিরহাট তথা উত্তরাঞ্চলের ঝাড়-জঙ্গলে জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠা চুঁই ঝাল এখন জায়গা করে নিয়েছে কৃষকের বাগানে। স্থানীয়রা এটিকে চেনেন ‘চইপান’ নামে।
সম্প্রতি এই অঞ্চলে কদর বেড়েছে চুঁই ঝালের। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিদিনই দলে দলে পাইকাররা ছুটছেন চুঁই ঝালের সন্ধানে।
সরেজমিন ঘরে দেখা গেছে চুঁই ঝালের বাণিজ্যিক চাষের ব্যাপক সম্ভাবনার বিষয়টি। জেলার ৫টি উপজেলাতেই ব্যক্তি উদ্যোগে হয়ে আসছে এর চাষ। তবে তা সীমাবদ্ধ রয়েছে বসতভিটায় লাগানো সুপারি, আম-কাঁঠাল কিংবা অন্য কোনো গাছেই।
এমন চুঁই চাষের দেখা মিলেছে আদিতমারী উপজেলার দেওডোবা এলাকার শিক্ষক পংকজ কান্তি রায়, কালীগঞ্জের তেঁতুলিয়ায় পলাশ চন্দ্র ও তার আশেপাশের বাড়িতে। এছাড়াও রয়েছে গোড়লের মোজাম্মেল হকসহ অনেকের বসতভিটায়।
একই সাথে এই চাষের খোঁজ মিলেছে পঞ্চগ্রাম, মেঘারাম, ভেলাবাড়ী, ভোটমারী, দইখাওয়া, বড়খাতাসহ প্রায় সকল গ্রাম এলাকাতেও। এক সময়ের পান চাষের জায়গাটি দখল করে চলেছে এই চইপান বা চুঁই ঝাল। উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে ক্ষুদ্র পান ব্যবসায়ীদেরও। তারা বর্গা কিংবা চুক্তিভিত্তিক চুঁই ঝালের চারা লাগিয়ে চলছেন কৃষকদের বাগানে।
এমনই পান ব্যবসায়ী ও চুঁই ঝাল চাষি গোড়লের আব্দুল হাকিম, উত্তর শ্রুতিধরের হাসানুর রহমান এবং দক্ষিণ মুসরত মদাতী গ্রামের প্রদীপ চন্দ্র রায়।
তারা প্রত্যেকেই বর্গা ও চুক্তিতে গড়ে তুলেছেন একাধিক চুঁই ঝালের বাগান। প্রতিজনের রয়েছে তিনশ’রও অধিক চুঁই গাছ। যা থেকে একেকজনের বার্ষিক আয় হয় অর্ধলক্ষাধিক টাকা। সাথে চারা থেকে আরও আয় তো রয়েছেই। প্রতি কেজি চুঁই বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায়।
এ বিষয়ে কথা হয় চুঁই ঝালের পাইকার (ক্রেতা) চাপারহাট এলাকার মজিদুল ও আলিমুল ইসলামের সাথে। কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চুঁই ঝাল সংগ্রহ করে বড় ব্যবসায়ীর মাধ্যমে তা পাঠান খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে করে তাদের ভালোই আয় হয় বলেও জানালেন তিনি।
আরও পড়ুন : উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত, ভোগান্তি বাড়ছে ছিন্নমূল মানুষের
ব্যাপক ওষুধি গুণসম্পন্ন এ চুঁই ঝালের চাষাবাদকে বাণিজ্যিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এর উৎপাদন প্রদর্শনী ও প্রশিক্ষণসহ কৃষি বিভাগের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রাপ্তি সম্ভব হলে জেলার অর্থনীতিতে চুঁই ঝালের চাষ ব্যাপক অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট মহলের।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড