• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দুলাভাই ধর্ষণ করল ১১ বছরের শ্যালিকাকে : অন্তঃসত্ত্বা ৭ মাসের

  সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

২৬ অক্টোবর ২০২০, ১৭:০৭
সুনামগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার গণিগঞ্জ এলাকায় আপন দূলাভাই কর্তৃক ১১ বছরের শিশু শ্যালিকাকে একাধিকবার ধর্ষণের ফলে সে এখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে একটি পক্ষ জোর তৎপরতা চালিয়ে মেয়েটিকে আত্মগোপনে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের গণিগঞ্জ কুমড়াইল গ্রামে। স্থানীয় একাধিক সূত্র ও সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়,গণিগঞ্জ কৃমড়াইল গ্রামের আলতা নবীর ১১ বছরের শিশু কন্যা সন্তানের সাথে তার বড় মেয়ের জামাতা কুমড়াইল গ্রামের মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে লম্পট লিটন মিয়ার অবৈধ সম্পর্কের ফলে শিশুটি এখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। যার কারণে এ ঘটনার বিষয়টি নিয়ে এখন এলাকায় তোলপাড় চলছে। কিন্তু একটি পক্ষ তা ধামাচাপা দেয়ার পায়ঁতারায় লিপ্ত রয়েছে বলে অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে।

লম্পট লিটন মিয়া প্রায় ৩ বছর পূর্বে গণিগঞ্জ কুমড়াইল গ্রামের আলতা নবীর বড় মেয়ে নার্গিসকে বিয়ে করেন এবং তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার কিছুদিন পর মারা যায়। শশুরবাড়ি একেবারেই পাশে থাকায় লম্পট লিটন মিয়া প্রায় সময়ই দিনরাত নেই শশুর বাড়িতে আসা যাওয়ার এক পর্যায়ে তার কুনজর পড়ে ১১ বছরের আপন শিশু শ্যালিকার উপর। সে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং একাধিকবার ধর্ষণের ফলে শিশুটি এখন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে।

এ নিয়ে এলাকার সচেতন মানুষজনের মধ্যে যাদের মেয়ে সন্তান রয়েছে তাদের মনের মধ্য এক ধরনের একটি আশঙ্কা কাজ করছে। এছাড়াও লিটন মিয়া গংরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেহ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। দিন দিন এই সমস্ত ধর্ষণের ঘটনার বিচার কার্য সম্পন্ন না হওয়াতে একদিকে যেমন ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে অন্যদিকে সুশীল সমাজের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে চরম আতংঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের দাবি অপরাধী যেই হোক তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকার ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি প্রত্যাশা করেন। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার আপন বড়বোন ও লিটন মিয়ার স্ত্রী নার্গিস বেগম তার স্বামী কর্তৃক আপন ছোটবোন ধর্ষণ ও সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বার সত্যতা স্বীকার করে জানান, তার স্বামী ছোটবোনকে বিয়ে করতে রাজি থাকলেও তার বোন বিয়ে করতে রাজি নন বলে জানান। বাল্যবিবাহ তো বর্তমান আইনে বাধা রয়েছে তাহলে কিভাবে একটি শিশুর তার স্বামীর সাথে বিবাহ হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমার বাবা আমার বোনকে লুকিয়ে রেখেছেন। তিনি আপোষ করার জন্য এলাকার পঞ্চায়েত এর লোকজনের সাথে আলাপ করছেন।

এ ব্যাপারে গণিগঞ্জ বাজারের পল্লী চিকিৎসক মো. আব্দুল লতিফ ১১ বছরের শিশুর অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এমন জঘন্যতম ঘটনার বিচার এবং শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় এমন অপরাধের মতো ঘটনা বেড়েই চলেছে। একটি অপরাধের বিচার না হওয়াতে আরো দশটি অপরাধের জন্ম হচ্ছে। তিনি লম্পট লিটন মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য সরকার ও প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে ধর্ষণকারী মো. লিটন মিয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ থাকায় তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে ধর্ষিতার পিতা মো. আলতা নবীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন এটা আমার পারিবারিক বিষয় আমি আপনার সাথে কোন কথা বলতে রাজি না। এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও গণিগঞ্জ এলাকার সালিশ ব্যক্তিত্ব মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম শিশু অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান। তবে এমন জঘন্য ঘটনায় কেহ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কাজি মুক্তাদির হোসেন চৌধুরী জানান, বিষয় জানা নেই তবে এখনই যোগাযোগ করে দেখতেছি ঘটনা সত্য হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাজই হচ্ছে যেখানে অপকর্ম কিংবা অপরাধ সংগঠিত হবে তার খোঁজে বের করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড