কুড়িগ্রামে হত্যা মামলায় আসামির মৃত্যুদণ্ড

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে সালিশ চলাকালীন সময়ে প্রতিপক্ষ আমিনুর ইসলাম (২৩) কে হত্যার অপরাধে মাহালম মিয়া (৪৮) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে বিজ্ঞ বিচারক মো. আব্দুল মান্নানের আদালতে এ আদেশ প্রদান করা হয়।

অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কুটি বামনডাঙ্গা গ্রামে দুই পক্ষের পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কমিউনিটি পুলিশিং-এর সহায়তায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওই গ্রামের শমসের আলীর উঠোনে সালিশ চলছিল। বৈঠক চলাকালীন সময়ে মাহালম মিয়া নিজের সঙ্গে রাখা দা দিয়ে প্রতিপক্ষ আমিনুর ইসলামের মাথায় ও বাহুতে কোপ দিলে ঘটনাস্থলে মাটিতে লুটিয়ে পরে আমিনুর। পরে গুরুতর আহত আমিনুর ইসলামকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।

এ ঘটনায় সালিশে বসা লোকজন মাহালমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। মাহালম ওই গ্রামের মৃত. বাসক শেখের ছেলে এবং নিহত আমিনুর ইসলাম একই গ্রামের মনছের আলীর ছেলে।

ঘটনাটি ঘটে ২০০৮ সালের ২৫ জানুয়ারি রাত ১১টার সময় সমশের আলীর উঠোনে। এ সময় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও কমিউনিটি পুলিশিং এর সহায়তায় সালিশ বৈঠকটি চলছিল। মাহালমের অভিযোগ তার স্ত্রীর সাথে নিহত আমিনুর ইসলামের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। মাহালম কুমিল্লা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় রিক্সাচালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। সে কুমিল্লায় কাজ করতে গিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে। ফলে বেশির ভাগ সময় সে কুড়িগ্রামের বাইরে অবস্থান করত। এ সময়ে আমিনুর ইসলামের সাথে তার প্রথম স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পারে। এ নিয়ে সেদিন সালিশ বৈঠক চলছিল। সেখানেই হত্যার ঘটনাটি ঘটে।

দীর্ঘ এক যুগ পর মঙ্গলবার কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিজ্ঞ বিচারক মো. আব্দুল মান্নান এর আদালতে একমাত্র আসামি মাহালমের অনুপস্থিতে তাকে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। আসামি মাহালম মামলা চলাকালীন সময়ে জামিন পেয়ে পলাতক রয়েছে।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন এবং আসামী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট এটিএম এরশাদুল হক চৌধুরী।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।