• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বৃষ্টি হলেই নির্ঘুম রাত জাগতে হয় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে

  এস এম ইউসুফ আলী, ফেনী

১৮ অক্টোবর ২০২০, ২২:০৬
ফেনী
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.শফি উল্যাহর স্ত্রী

দেশের মানুষদের অর্থনৈতিক মুক্তি ও স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.শফি উল্যাহ। দেশের মানুষদের অর্থনীতির মুক্তিও মিলেছে, সবার বেঁচে থাকার অধিকারও নিশ্চিত হয়েছে।

তবে, শফি উল্যাহর পরিবারের সদস্যদের বাসস্থানের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি কোন সরকার। সরকার আসে সরকার যায়, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা শফি উল্যাহর স্ত্রী সন্তানদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন ঘটেনা। একটি খুঁপড়ি ঘরে তাদের বসবাস। বৃষ্টি এলেই ঝরঝরিয়ে পানি পড়ে একাকার হয়ে যায় পুরো ঘর। নিদারুণ কষ্টে থাকতে হয় তাদের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি গৃহহীন মানুষদের আবাসন করে দেয়ার ঘোষণা দিলে বহু আশা নিয়ে বুক বেঁধেছিলেন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আয়েশা খাতুন। সরকারি খরচে একটি ঘর পেতে ২০২০ সালের ৮মার্চ স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু যথাযথভাবে তদ্বির না হওয়ায় ১৬ লাখ টাকা খরচে সদ্য তালিকাভুক্ত ৩৪টি ঘরের তালিকায় ঠাঁই হয়নি মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আয়েশার।

এর আগে গৃহহীন মানুষদের গৃহনির্মাণ প্রকল্পের 'ক' তালিকায়ও স্থান হয়নি তার। পরবর্তীতে জায়গা আছে ঘর নেই এমন তালিকা থেকেও বাদ পড়েছিলেন তিনি। উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চরসাহাভিকারী গ্রামের আশকার কামলা বাড়ির মুক্তিযোদ্ধা মো. শফি উল্যাহ স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রেখে মৃত্যুবরণ করেন।

তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রী আয়েশা খাতুন দুই ছেলে এক কন্যা সন্তান নিয়ে সাড়ে সাত শতক জমির উপর একটি কুড়ে বসবাস করে আসছেন। মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিলেও দুই ছেলের অবস্থা নুন আনতে পান্তা পূরায়। দুই পুত্র পেশায় অটো রিক্সা চালক।

মৃত মুক্তিযোদ্ধা শফি উল্যাহ আমৃত্যু সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে দীর্ঘদিনের পুরনো খুপরি ঘরটিতে চরম মানবেতর দিনাতিপাত করছেন আয়েশা খাতুন।

তিনি জানান, বৃষ্টি হলেই রাত জেগে বসে বসে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। তার কোন তদ্বিরকারক না থাকায় তিনি সন্তানদের নিয়ে বসবাসের আবাসটুকু পাচ্ছেনা। দীর্ঘ প্রায় ৭মাস পূর্বে আবেদন করেও তিনি ঘর পাননি। মাথাগুজার ঠাঁই হিসেবে একটি ঘর পেতে মানবতার নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন এ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অজিত দেব জানান, 'খ'' তালিকায় তালিকাভুক্তির জন্য এলাকায় ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়েছিল। তারা যোগাযোগ না করায় তালিকায় নাম আসেনি। সোনাগাজী উপজেলা থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ৫হাজার ঘরের চাহিদার তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি আরও ৩৪জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার ঘর নির্মাণের জন্য তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। আগামীতে ওই পরিবারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঘর করে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড