• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বঙ্গবন্ধু পরিবারের ছবি এঁকে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে চান ‘বাকহীন’ মুন্নি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ অক্টোবর ২০২০, ১৫:২৭
টাঙ্গাইল
মুন্নি ও তার হাতে আঁকা ছবি

মুখে ভাষা নেই। জন্মের ছয় মাস পর থেকেই কান্নার শব্দও বের হয় না তার মুখ থেকে। তবে, এখন কথা বলে তার আঁকা ছবি, তার শিল্পকর্ম। বলছি, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী সুইটি আক্তার মুন্নির কথা।

মুন্নি প্রতিবন্ধী হলেও অন্য দশজন প্রতিবন্ধীর মতো দমে যাননি। তিনি তার মেধা ও মন খাটিয়ে এক অনন্য প্রতিভার অধিকারী হয়ে ওঠেছেন মাত্র ১৯ বছর বয়সেই। যখন থেকে তিনি আঁকতে শিখেছেন, তখন থেকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি আঁকার চেষ্টা করেছেন।

মানুষের মুখে উচ্চারিত ‘শেখ মুজিব’ নামটি সোনার সৌভাগ্য তার হয়নি। মুখ ফুটে বলতে পারেন না, হে জাতির পিতা শেখ মুজিব তোমায় ভালোবাসি! তাই তো রঙ-তুলির আঁচড়ে এঁকেছেন বঙ্গবন্ধুর ছবি। হৃদয়ে তার বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। মুন্নি অপলক তাকিয়ে থাকেন তার আঁকা ছবির দিকে। তার চাহনিতে ফুটে ওঠে মহান নেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার নমুনা।

সৃষ্টিকর্তা তাকে কথা বলার কোনো ক্ষমতা দেননি, কিন্তু দিয়েছেন সুন্দর দুটি হাত। কথা বলতে না পারলেও, তার আঁকা ছবি ঠিকই কথা বলে। একবার চোখের দেখায় আঁকতে পারে সব ধরনের ছবি। এমনি এক প্রতিবান চিত্রশিল্পী সুইটি আক্তার মুন্নি।

তার জন্ম শেরপুর জেলার শ্রীবর্দ্দী উপজেলার কুড়িকাহনীয়া গ্রামে হলেও, বাবার চাকরির সুবাদে পুরো পরিবার এখন স্থায়ীভাবে বসবাস করেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পৌর এলাকার সবুজবাগে। তার বাবার নাম আব্দুল মালেক পেশায় একজন পুলিশ কনস্টেবল ও মা গৃহিণী সুফিয়া বেগমের ঘরে তিন মেয়ের মধ্যে মুন্নি বড়।

মুন্নির মুখে কথা ফোটার আগেই মাত্র ছয় মাস বয়সে আক্রান্ত হন নিউমোনিয়া রোগে। তার পরিবারের ধারণা, নিউমোনিয়া রোগে কেড়ে নিয়েছে মুন্নির মুখের ভাষা। অন্য সাধারণ শিশুদের মতোই পরিবারে বেড়ে ওঠে মুন্নি। সুস্থ স্বাভাবিক ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ২০১৭ সালে এসএসসি এবং ২০১৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। মুন্নি ম্যানেজমেন্ট বিষয় নিয়ে বর্তমানে পড়াশোনা করছেন ভূঞাপুর সরকারি ইব্রাহিম খাঁ কলেজে। সে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

মুন্নির মা বলেন, ‘আমার মেয়ে যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে, তখন থেকে একটু একটু করে ছবি আঁকা শুরু করে। ছবি আঁকার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তার নেই। তবু চোখের দেখায় হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় যে কোনো ধরনের ছবি আঁকতে পারেন। তিনি বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, শেখ রাসেলসহ তাদের পরিবারের ছবি বেশি আঁকতে পছন্দ করেন।’

‘আমার মেয়ের অনেক ইচ্ছে একদিন ঢাকায় গিয়ে আর্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। সেখানে সে বিজয়ী হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার আনবে। মুন্নির মনে অনেক ইচ্ছে তার আঁকা ছবি প্রধানমন্ত্রীর হাতে উপহার হিসেবে দিতে পারলেই সে সার্থক হবে। আমিও মরে গিয়ে শান্তি পাবো আমার মেয়ের ইচ্ছে পূরণ হলে’, বলেন মুন্নির মা।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড