লালমনিরহাট প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম সদর ইউনিয়নে এক ব্যক্তিকে রশি দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিটির নাম মোস্তফা আলী (৩৬)।
তিনি উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সর্দারপাড়া এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে। তিনি পেশায় রং মিস্ত্রি। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় পাটগ্রাম থানা পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবার (৩ অক্টোবর) সকালে ওই ব্যক্তিকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয় এবং তাঁর সাথে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয় অভিযুক্তরা।
থানা পুলিশ ও এজাহার সূত্র জানা গেছে, উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের সর্দারপাড়া প্রাণকৃষ্ঞ এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে মোস্তফা আলী রং মিস্ত্রির কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং বাড়িতে গরু পালন করে। প্রায় ৮ বছর ধরে মোস্তফা আলীর গাভীর দুধ দোহাইয়া নিয়মিতভাবে ক্রয় করে একই এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে হামিদুল ইসলাম (৪৫)।
প্রায় ৬ মাস পূর্বে মোস্তফা আলীর বড় ছেলে মোয়াজ আলী (১৩) অসুস্থ হলে তিনি পার্শ্ববর্তী থানা কালীগঞ্জ এলাকা থেকে এক জন জনৈক কবিরাজ নিয়ে এসে চিকিৎসা করে। অভিযুক্ত হামিদুল ও তাঁর স্ত্রী তাছলিমা বেগমের মধ্যে সাংসারিক বিরোধের কারণে উক্ত কবিরাজের নিকট চিকিৎসা গ্রহণ করে। চিকিৎসা গ্রহণ কালে তাদের ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। কবিরাজের চিকিৎসা গ্রহণের পরও স্বামী - স্ত্রীর মধ্যে সাংসারিক বিরোধের বিষয় সমাধান না হওয়ায় তাঁরা মোস্তফা আলীকে দোষারোপ ও গালিগালাজ করে এবং তাদের কবিরাজি চিকিৎসা খরচ ১২ হাজার টাকা ফেরত চায়। ফলে তাদের মোস্তফা আলীর সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
পরে শনিবার সকাল সাড়ে ৭ টার সময় মোস্তফা আলী নিজ বাড়ি থেকে রং ক্রয় করার জন্য ৫০ হাজার টাকা নিয়ে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। পথে জগতবেড় ইউনিয়নের ডাকুয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছলে একই এলাকার হামিদুল ইসলাম (৪৫) ও তাঁর স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৩২), মেয়ে হাওয়া খাতুন (১৫), আব্দুল খালেক , নুরুল হক (৬০), মোস্তফা (৪২) ও ফাতেমা বেগম (৫০) সকলে মিলে দলবদ্ধ হয়ে মোস্তফা আলীর পথরোধ ও আটক করে তাহার নিকট ১২ হাজার টাকা দাবি করে। তিনি অস্বীকার করলে তাহাকে এলোপাথাড়ি ভাবে মারপিট করে এবং তাঁর সঙ্গে থাকা ৫০ হাজার টাকা ও ১ টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
এরপর আব্দুল খালেকের কাঁঠাল গাছের সাথে মধ্যযুগীয় কায়দায় রশি দিয়ে বেঁধে মার পিট করে। রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের সময় অনেকে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ ঘটনায় ওই দিনই নির্যাতনের শিকার মোস্তফা আলীর স্ত্রী মহসেনা বেগম পাটগ্রাম থানায় মামলা করে। শনিবার রাতে পাটগ্রাম থানা পুলিশ আটক করেন অভিযুক্ত হামিদুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী তাছলিমা বেগম, আব্দুল খালেক ও ফাতেমা বেগমকে।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার মোস্তফা আলী বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে আমার ছেলে অসুস্থ হলে আমি পার্শ্ববর্তী থানা কালীগঞ্জ এলাকা থেকে এক জন জনৈক কবিরাজ নিয়ে এসে চিকিৎসা করি। হামিদুল ও তাঁর স্ত্রী তাছলিমা বেগমের মাঝে সাংসারিক বিরোধ থাকার কারণে উক্ত কবিরাজের নিকট চিকিৎসা গ্রহণ করে। চিকিৎসা গ্রহণ কালে তাদের ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। চিকিৎসায় তাদের কাজ না হওয়ায় তাঁরা বিভিন্ন সময় আমার কাছে ওই টাকা ফেরত চায়। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা আমাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করে।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমার মহন্ত বলেন, গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতনের শিকার মোস্তফা আলীর স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ চার জনকে আটক করে। তাদের রবিবার লালমনিরহাট আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড