• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শ্রীপুরে হামলার শিকার পুলিশ

  গাজীপুর প্রতিনিধি

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:৩০
গাজীপুর
গ্রেফতারকৃত আসামিরা

গাজীপুরের শ্রীপুরে জাতীয় সেবা ৯৯৯ এ কল পেয়ে দুই আদম ব্যবসায়ীকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন শ্রীপুর থানা পুলিশের দুই সদস্য ও এক আনসার সদস্যসহ পাঁচ জন।

শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর)রাতে শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের কসাইপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পরে খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান খান, পুলিশ পরিদর্শক গোলাম সারুয়ারসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। ওই রাতে দেড়টার দিকে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র-গুলিসহ, দুই পুলিশ সদস্য ও এক আনসার সদস্যসহ আটক চারজনকে উদ্ধার করেন।এসময় তাদের উদ্ধার করতে যাওয়া পুলিশের শটগান ও গুলি ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ করে পুলিশ। পরে ওসি’র নেতৃত্বে পুলিশের একাধিকদল অভিযান চালিয়ে দুই মহিলাসহ ৬ হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ এবং ছিনিয়ে নেয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করে।

আটকরা হলো, রোশনী (৪০)শেরপুর জেলার কালিগঞ্জের দমদমা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের মেয়ে ,মনিশা মনি(২৫) শ্রীপুর উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের নাজমুল হোসেন রকির স্ত্রী, ফরহাদ(১৮)একই উপজেলার দিঘলাপাড়া নয়নপুর গ্রামের আফসার উদ্দিনের ছেলে, তাজুল ইসলাম(২৪)নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লাফুয়া গ্রামের জাফর মোল্ল্যার ছেলে, আব্দুর রহমান(২০) ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জ গ্রামের সোলাইমানের ছেলে এবং মো. আজাহার (৫৫) শ্রীপুর উপজেলার নোয়াগাও গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে।

মারধরের ঘটনায় আহতরা হলেন,আবুল কালাম (৩২) কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার জাফরাবাদ গ্রামের ইদ্রিস মিয়া ছেলে, মো.আবুল হোসেন রনি (৪৫)একই উপজেলার নবিয়াত গ্রামের আয়াত আলীর ছেলে, ফয়সাল আহমেদ(৩৬) কুমিল্লা জেলার হোমনা থানার মঙ্গলকান্দি গ্রামের শাহ্ আলমের ছেলে,অমর বেপারী (৩৪)লক্ষীপুর জেলার রায়পুরা উপজেলার কেওড়া ডুবি গ্রামের নিখিল বেপারীর ছেলে।

হামলার আবুল হোসেন রনি জানান, তিনি ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার “রাখা ইন্টারন্যাশনাল”এর মার্কেটিং অফিসার হিসেবে তিনি কর্মরত রয়েছেন । লাইসেন্সধারী এ প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন দেশে বৈধভাবে লোক পাঠানো হয়। এবছরের ফেব্রুয়ারিতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি নোয়াগাঁও এলাকার ইসমাইল হোসেন ও শাহাদত হোসেন নামের দুইজনকে দুবাই পাঠানোর জন্য তাদের কাছ থেকে দুই লাখ ৬০হাজার টাকা নেয়া হয়। কাগজপত্র প্রক্রিয়া করতে গিয়ে করোনাকালীন লকডাউনে তাদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়। এতে করে তাদের আর বিদেশ পাঠানো সম্ভব হয়নি। এমতাবস্থায় ইসমাইল হোসেন তাদের জমা দেয়া টাকা ফেরত দিতে বলেন। পরে এপ্রিলে ইসমাইলকে ৫০হাজার টাকা বিকাশ করে ফেরত পাঠানো হয়। পরে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ফোন করে ইসমাইল আমাকে তার গ্রামের বাড়িতে দাওয়াত দেন এবং আরো লোকজনকে বিদেশ পাঠানোর জন্য আলোচনা করার প্রস্তাব দেন। দাওয়াত পেয়ে বৃহস্পতিবার ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে তিনি (আবুল হোসেন রনি) ও তার অপর বন্ধু মো. ফয়সাল আহমেদকে নিয়ে শ্রীপুরের নোয়াগাঁও ইসমাইলের বাসায় যান। পরে ইসমাইল তার ঘরের ভেতর আমাদের খাওয়া-দাওয়া সেরে দরজা আটকে দিয়ে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার রিমা ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ কয়েকজন নানা ভয়-ভীতি দেখিয়ে একটি ৩০০টাকা মূল্যের সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় এবং তারা সঙ্গে থাকা দুইটি মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে যায়। পরে ওই স্ট্যাম্পে ইসমাইল আমার কাছে ৫লাখ টাকা পাবেন বলে লিখে এনে আমাকে ওইদিনই পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করার জন্য চাপ দেয়। বিষয়টি জানিয়ে আমার সহকর্মী মো. ফয়সালকে খবর দিলে পরদিন শুক্রবার রাত ৮টায় ফয়সাল, তার বন্ধু অমর বেপারী, মো. কালাম ও মাসুমকে সঙ্গে নিয়ে ইসমাইলের বাড়িতে পৌঁছান। মাসুম ছাড়া অন্যরা ওই ঘরে ঢুকেন। তারপর ঘরের দরজা আটকে স্ট্যাম্প দেখিয়ে ৫লাখ টাকা দাবি করে ইসমাইল ও তার লোকজন। একপর্যায়ে টাকা না নিয়ে যাওয়ায় তাদের উপর মারধর করেন। মাসুম বাইরে থেকে মারধরের বিষয়টি টের পেয়ে জাতীয় সেবা নাম্বার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানায়।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে শ্রীপুর থানার টহল পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল খোরশেদ আলম ও এক আনসার সদস্য ইসমাইলের বাড়িতে যান। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে, ইসমাইল ও তার লোকজন অতর্কিত পুলিশের উপরও হামলা চালায় এবং পুলিশের সঙ্গে থাকা শটগান ও পিস্তলের গুলিভর্তি ম্যাগজিন ছিনিয়ে নেয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দুই মহিলাসহ ৬ জনকে আটক ও ছিনিয়ে নেয়া অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়। আহত পুলিশ সদস্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫ জনকে অজ্ঞাত করে আহত উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম এবং আটক করে রাখার ঘটনায় উদ্ধারকৃত আবুল হোসেন রনি গং আরেকটি পৃথক মামলা করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড