• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ফেনীতে ভেজাল বীজ রোপণে বিপাকে কৃষকরা, কর্মকর্তা জড়িত থাকার ইঙ্গিত

  ফেনী প্রতিনিধি

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:০৭
(ছবি : দৈনিক অধিকার)

ফেনীতে ভেজাল ধানের বীজ রোপণ করে কৃষকরা বিপাকে পড়ায় তোলপাড় চলছে। ফলন বিপর্যয়ের ঘটনা তদন্ত কাজ চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এ নিয়ে কেউ মুখ না খুললেও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের কোন কোন কর্মকর্তা জড়িত থাকার ইঙ্গিত মিলেছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না জানালেও নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে এমন চিত্রই বেরিয়ে আসছে।

কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, জেলায় ৪ প্রজাতির হাইব্রিড, ৩৫ প্রজাতির উফশী ও ১১ প্রজাতির বীজ বপন করা হয়। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের অ্যারাইজ-৭০০৬ দাগনভূঞা উপজেলায় ৪৪ হেক্টর জমি, অ্যারাইজধানীগোল্ড সোনাগাজী উপজেলায় ১৩ ও পরশুরাম উপজেলায় ১ হেক্টর, ব্রিহাইব্রিড ধান-৪ সোনাগাজী উপজেলায় ৬ হেক্টর, ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ সোনাগাজী উপজেলায় ৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

এছাড়া উফশী জাতের ১৪৭৫৯.৪৬ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৪৯, ৮৭৮৩.০৮ হেক্টর জমিতে বিআর-২২, ৭২২৮.৮০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৫২, ৪৭৭৫ হেক্টর জমিতে বিআর-১১, ৪২২২ হেক্টর জমিতে স্বর্নাবাসুরী, ৩৯৮৫ হেক্টর জমিতে বিআর-২৩, ৩৮৭২.৬০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৫১, ৩৯৬৬ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৪৬, ২৮৫৮.৮৭ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৪৪, ১৬৩৮ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৪১, ১০৩৮ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৪০, ৫৩০.৮০ হেক্টর জমিতে বিনাধান-৭, ৩৪৯.৩৩ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৭৬, ৩১১ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৭২, ২৫৯.৯০ হেক্টর জমিতে

ব্রিধান-৭৫, ২৪৫ হেক্টর জমিতে বিআর-১০, ২৪২ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৩০, ২২৫ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৩২, ১৮১.৪০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৮০, ১৬০.৯০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৭১, ১১১.৬০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৮৭, ৬৮.২০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৭৮, ৫০.১৪ হেক্টর জমিতে বিনাধান-১৭, ৪৯ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৩৪, ৩৩.৮০ হেক্টর জমিতে বিনাধান-১৬, ২২ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৭৭, ২১.৮০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৭৩, ২০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৩৯, ১৩.২০ হেক্টর জমিতে বিনাধান-১১, ৮.৮৩ হেক্টর জমিতে বিনাধান-২০, ২.৫ হেক্টর জমিতে নেরিকামিউট্যান্ট, ০.৪০ হেক্টর জমিতে ব্রিধান-৯৫, ০.১৩ হেক্টর জমিতে বিনাধান-১৩, ০.১৩ হেক্টর জমিতে বিনাধান-১৫, ০.১৩ হেক্টর জমিতে বিনাধান-২২,

স্থানীয় জাতের ১৫৭৭ হেক্টর জমিতে বিন্নি, ১২০০ হেক্টর জমিতে কার্তিকশাইল, ১১৫৮ হেক্টর জমিতে ঘিগজ, ৬৯০ হেক্টর জমিতে রাজাশাইল, ৬৭৫ হেক্টর জমিতে কাজলশাইল, ৪৬৫ হেক্টর জমিতে বাজাল, ৩০০ হেক্টর জমিতে আগনশাইল, ২৭৩ হেক্টর জমিতে কালিজিরা, ৪২ হেক্টর জমিতে চিনিগুড়া, ৩০ হেক্টর জমিতে লতিশাইল, ১০ হেক্টর জমিতে তিলককচরী প্রজাতির বীজ আবাদ করা হয়।

সূত্র জানায়, ভেজাল বীজ রোপণ করে কৃষক বিপাকে পড়ার ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে এসেছে কিছু তথ্য। কৃষি বিভাগের লোকজন দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের বারাহিগোবিন্দ গ্রামে গিয়ে দেখতে পেয়েছেন কৃষকের কাছে একটি ব্রি-ধান ৫১ ও বিনা ধান ১৭ জাতের বীজের প্যাকেট। ওই প্যাকেটে লিখা রয়েছে নেত্রকোনা জেলার। বিনা ধানের প্যাকেটে লিখা রয়েছে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য। ওই দুটি বীজ ব্যবহার করে কৃষকরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তদন্তকারী সূত্রের তথ্যমতে, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বীজ উৎপাদন) ফেনী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক প্রণবানন্দ ভৌমিক সহ কতিপয় কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকরা মিশ্রিত দুটি জাতের বীজ সংগ্রহ করে রোপণ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

অতিরিক্ত মুনাফা পেতে কোন ধরনের রশিদ ছাড়াই মিশ্রিত বীজ সরবরাহ করেন তিনি। তবে বীজ সংগ্রহের কোন ধরনের রশিদ দেখাতে পারেনি কৃষক। তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদে প্রণব কৃষকদের বীজ দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বিনা ধান ১৭ জাতের বীজ বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতেও নেই।

কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ফেনীর সিনিয়র সহকারী পরিচালক আবু সাঈদ মোহাম্মদ হাসান লতিফ তখনকার সময়ে ছুটিতে থাকায় কৃষকদের বীজ বিপন্ন ও বীজ প্রক্রিয়াজাত করণ সংক্রান্ত বিষয় দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন প্রণবানন্দ ভৌমিক। প্রণব সহ কতিপয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরও নানা অভিযোগের তথ্য তাদের কাছে রয়েছে।

নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, নেত্রকোনা থেকে প্রেরিত বীজের প্যাকেটটি কৃষি বিভাগের নির্ধারিত কৃষকদের বিনামূল্যে বিতরণের জন্য। এছাড়া বিনামূল্যে বিতরণের তালিকায় ওই বীজ ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের নামও নেই।

জানতে চাইলে কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বীজ উৎপাদন) ফেনী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক প্রণবানন্দ ভৌমিক এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবী করেন। এর বেশি তিনি কথা বলতে রাজী হননি।

ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তোফায়েল আহম্মেদ চৌধুরী জানান, বীজ রোপণ করে কৃষকের হয়রানির ঘটনা অতীতে কখনো ঘটেনি। বিষয়টি তদন্তের জন্য গঠিত ৬ সদস্যের কমিটি কাজ করছে। আগামী সপ্তাহে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মঞ্জুরুল হুদার কাছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড