• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শূণ্য থেকে কোটিপতি, ইউপি চেয়ারম্যান  আলমের বিরুদ্ধে এবার চাঁদাবাজির অভিযোগ

  সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২২:৩৮
শূণ্য থেকে কোটিপতি, ইউপি চেয়ারম্যান  আলমের বিরুদ্ধে এবার চাঁদাবাজির অভিযোগ
শূণ্য থেকে কোটিপতি, ইউপি চেয়ারম্যান  আলমের বিরুদ্ধে এবার চাঁদাবাজির অভিযোগ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে শূণ্য থেকে কোটিপতি হওয়ার অভিযোগটি দুদকের তদন্তাধীন থাকা অবস্থাতে এবার প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা হেদায়েতুল আলম রেজার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাঁচলিয়া বাজার এলাকায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চেয়ারম্যান ও তার সমর্থকদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে পাঁচলিয়া বাজার এলাকায় আন্তর্জাতিকমানের ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণকাজের সাব-ঠিকাদার হিসেবে বালু সরবরাহের কাজ করছিলাম। সেখানে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছে চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আলম রেজা।

বালু সরবরাহের কাজ চলমান অবস্থায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আলম রেজার নির্দেশে তার সমর্থক আব্দুল্লাহ, রমজান আলী, এনামুল, হাফিজুল ইসলাম, রঞ্জু, দুলাল, তোতা মিয়া ও মো. আমিরসহ অজ্ঞাত পরিচয় ২০/২৫ জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় তারা আমার ট্রাক ড্রাইভার শাহ আলী ও রানাকে বলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে এখানে কোন প্রকার মাটি ফেলা যাবে না। এ সময় তারা আমার ড্রাইভারদেরকে ব্যাপক মারপিট করে এবং এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করে। তাদের ত্রাসের কারণে এক পর্যায়ে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আমার ড্রাইভাররা ভয়ে সেখান থেকে দ্রত পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় ১৭ সেপ্টেম্বর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মোজাম্মেল হক নামে অপর ভুক্তভোগী বলেন, পাঁচলিয়া বাজারে আমার একটি হোটেল ছিল। চেয়ারম্যান আলম রেজার লোকজন ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দেয়ায় তারা আমার দোকান সম্পূর্ণ লুট করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়েছেন।

৭নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল আলীম ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আলম রেজা এলাকার কোন উন্নয়ন করেননি। চাঁদাবাজি ও দূর্নীতির মাধ্যমে শুধু নিজে সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এসব বিষয়ে চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আলম রেজা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনে মানববন্ধ ও সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মর্সূচি পালন করা হচ্ছে সেসব বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবারও আমি প্রার্থী হবো। এ কারণে প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যাচার করে আমাকে হেয় করার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেড জেড তাজুল হুদা বলেন, নির্মাণাধীন ট্রাকস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজির অভিযোগে রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মামলার প্রধান আসামী আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল আলম রেজার বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে শূণ্য থেকে কোটিপতি হওয়ার বিষয়ে দুদক পাবনা কার্যালয় ও ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে করা লিখিত অভিযোগের তদন্ত করছে পাবনা সমন্বিত দুর্নীতি দমন কার্যালয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুদক কার্যালয়ে তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।

দুদকে দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হেদায়েতুল আলম ২০১১ ও ২০১৬ সালে টানা দু’দফায় আওয়ামীলীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান হয়েই উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার জেলার গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক অঞ্চল হাটিকুমরুল এলাকার একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে বসেন তিনি। সকল বৈধ-অবৈধ ব্যবসা নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন। মার্কেট, পরিহবণ ব্যবসা, মৎস্য আড়ত, বরফ কারখানাসহ সকল কিছুই তার ইশারায় চলে। এ অঞ্চলের মাদক ব্যবসাও নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। এভাবে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে পর্যায়ক্রমে বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ী সুপার মার্কেট, জায়গা-জমির মালিক বনে যান তিনি। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মারপিটে ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন নিজ দলের অনেক নেতাকর্মী। পাল্লা ভারি করতে জামায়াত-বিএনপি থেকে লোকজনকে নিজ দলে বেড়ানোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড