• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সভাপতি-সেক্রেটারির যোগসাজশে প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্য!

  গাইবান্ধা প্রতিনিধি

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:৩৪
বিদ্যালয়
ওসমানেরপাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (ছবি : দৈনিক অধিকার)

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ওসমানেরপাড়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাহার আলী মোল্লার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন দুর্নীতিসহ নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোখলেছুর রহমান সাজু ও সেক্রেটারি তাহেরুল ইসলামের সঙ্গে যোগসাজশে তিনি এমন কাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগেও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িক বরখাস্তও হয়েছিলেন।

এ ঘটনায় সম্প্রতি বিদ্যালয়ের দাতাসদস্য আরিফ হোসেন দুলাল সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি পদে লোক নিয়োগের জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। একটি পদের বিপরীতে আব্দুর রাজ্জাক ও আজাদুল ইসলামসহ কয়েকজন আবেদন করে। তারা আবেদন করলেও পরীক্ষার প্রবেশপত্র পাননি। পরে চলতি বছর তারা জানতে পারে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে ওই পদে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে ২০১৫ সালে দুটি শাখা খুলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দুই জন শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়। শাখা পদ দুটির জন্য ২০০৪ সালের অনুমোদন দেখানো হলেও তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাখা খোলার জন্য কোনো রেজুলেশন করেননি। এসব দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলতে গেলে, সভাপতি অভিযোগকারীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানোসহ লাঞ্ছিত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের পুরাতন বই বিক্রির টাকা বিদ্যালয়ের ফান্ডে জমা না রেখে উল্টো তা বিদ্যালয় কমিটি আত্মসাৎ করেন। প্রতি বছর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন বই বিতরণে কেরানি তাহিরুল ইসলাম প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সেক্রেটারি তাহেরুল ইসলাম অবৈধভাবে সিমকার্ড রেজিস্ট্রেশন করে উপবৃত্তির টাকাও আত্মসাৎ করেছেন। তার কাছে প্রায় শতাধিক ভুয়া সিমকার্ড রয়েছে, যা বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীদের নামে দেখানো হয়েছে।

এ দিকে, সম্প্রতি বিদ্যালয়ের প্রায় ৩ লাখ টাকা মূল্যের কয়েকটি মেহগনি গাছ কাটা হয়। কিন্তু বিধি মোতাবেক বিদ্যালয়ের নিজস্ব জায়গাতে অবস্থিত গাছ কাটার প্রয়োজন হলে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্রের বিধি অনুযায়ী উপজেলা কমিটির সভাপতি ও নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করলে তবেই প্রকাশ্যে নিলাম কিংবা টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ কাটার আহ্বান করা যায়। এমনকি গাছ বিক্রির টাকা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে জমা করার কথা উল্লেখ থাকলেও তার প্রয়োজন বোধ করেননি প্রধান শিক্ষক।

পরে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে একটি তদন্ত টিম বিদ্যালয়ে আসে। তদন্ত শেষে বিধি মোতাবেক গাছ কাটা হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন তারা।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোজাহার আলী বলেন, দপ্তরি নিয়োগ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। তবে আব্দুর রাজ্জাক আবেদন করলেও পরীক্ষায় প্রবেশপত্র কেন পায়নি জানতে চাইলে, তিনি কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।

আরও পড়ুন : স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বরাদ্দের দেড় কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ

এ দিকে, বিদ্যালয়ের গাছ কাটার সত্যতা স্বীকার করে সভাপতি মোখলেছুর রহমান সাজু দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের গাছ কাটার বিষয়ে অনুমতি নিতে হয় তা আমাদের জানা ছিল না।’

বিষয়টিতে সাঘাটা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তুহিন হোসেন দৈনিক অধিকারকে জানান, ‘বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির একটি অভিযোগ পেয়েছি। করোনার কারণে তদন্ত করতে সময় লাগছে। তবে এই সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করা হবে।’

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড