• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিবগঞ্জে বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ফেরদৌসীর পরিবার

  চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৪:৩৫
চাঁপাইনবাবগঞ্জ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে গৃহবধূ ফেরদৌসীর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত চলছে। বিচারের আশায় বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ফেরদৌসী পরিবার।

শনিবার দুপুরে বাদী শফিকুল আলম বলেন, গত ১০ আগস্ট থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে অভিযোগ গ্রহণ না করায় গত ১৬ আগস্ট বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন। গৃহবধূ ফেরদৌসী হচ্ছে- শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের পারচৌকা গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী ও একই এলাকার রাণীনগর ঘুনটোলা গ্রামের শামসুদ্দিনের মেয়ে।

জানা গেছে- প্রায় ৭ বছর আগে শহিদুল ইসলামের সাথে ২ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুক নেয়ার ধারাবাহিকতায় গত ৭ আগস্ট শুক্রবার শহিদুল তার স্ত্রী ফেরদৌসী পিতার নিকট হতে ২০ হাজার টাকা যৌতুক এনে না দেয়ায় ওই দিন রাতে শহিদুল ও তার আত্মীয়রা ফেরদৌসীর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে টানা ২৪ ঘণ্টা লাশ ঘরে লুকিয়ে রাখে। ফেরদৌসীর পিতা-মাতাকে খবর দেয়, তার মেয়ে বাক্স থেকে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। ৮ আগস্ট ফেরদৌসীর মা জাহানারা বেগম জামাইয়ের বাড়ি গেলে জামাই ও তার বাড়ির লোকজন তার সাথে মারমুখী আচরণ করে। সেদিন রাত পৌঁণে ১২টার দিকে শহিদুলের আত্মীয় স্বজনরা তার শশুর শামুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে টাকাসহ মেয়ে খুঁজে বের করার জন্য আবারো চাপ সৃষ্টি করে বাড়ি ফিরে আসে।

পরদিন ৯ আগস্ট সকাল ৮টার দিকে শহিদুলের বাড়ির পার্শ্বে মনাকষা চকের নদীতে ফেরদৌসীর লাশ ভেসে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ শনাক্ত করে। এ সময় শহিদুল ইসলামের আত্মীয়স্বজন তড়িঘড়ি করে ফেরদৌসীর পিতা-মাতার নিকট সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। পরদিন লাশ ময়নাতদন্ত শেষে শফিকুল ইসলাম শিবগঞ্জ থানায় একটি এজাহার জমা দিলেও মামলা গ্রহণ না করে ওসি আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।

বাদী শফিকুল ইসলামের অভিযোগ- আসামি ও তাদের লোকজন ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তিনি জানান, লাশ উদ্ধারের দিন আমার পিতা মাতা যখন অজ্ঞান অবস্থায় ছিল তখন আসামি পক্ষের লোকজন ও পুলিশ নদী থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তে পাঠানোর কথা বলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর/টিপসই নেয়। এখন তারা এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার চালাচ্ছে এবং আমাদেরকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে।

ফেরদৌসীর ভাবী ফাতিমা বেগম, ফুফু সায়েদা বেগম গুধী, চাচা উজির আলি, চাচা আবেদ আলিসহ ফেরদৌসীর অন্যান্য আত্মীয়দের দাবি- যৌতুকের ২০ হাজার টাকা জন্য শহিদুল তার আত্মীয়রা ফেরদৌসীকে পিটিয়ে হত্যা করে প্রথমে লাশ আমাদের বাড়িতে ফেলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে নদীতে পাটের জাগের মধ্যে চাপা দেয়। যা পরদিন সকালে ভেসে উঠলে বিষয়টি জানাজানি হয়। আমরা মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিপন বলেন, লাশ ফুলে যাওয়ায় শরীরে কোন দাগ বুঝা যায়নি।

শিবগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শাহীন রেজা বলেন, নিহতের ভাই শফিকুল আলম বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেছেন। প্রেক্ষিতে থানায় মামলা রুজু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টে দেখা গেছে- পানিতে ডুবে ফেরদৌসীর মৃত্যু হয়।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড