• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হাইকোর্টের রায় উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষক যোগদানে বাঁধা সভাপতির

  সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

১০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১০:৫৩
সিরাজগঞ্জ
মমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল

হাইকোর্টের রায়-রাজশাহী মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের আদেশ উপেক্ষা করে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের বিধিমতে বৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নিয়োগে বাঁধা দিচ্ছেন একই স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগসাজশে সভাপতি এহসানুল হাসান সন্টু স্কুলের ভবন বিক্রি ও ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ফাঁস হওয়ার ভয়ে যোগদানে বাঁধা দেয়ার জন্য নানা ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে।

জানা যায়, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ ও তার স্ত্রীর একান্ত একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরালকে কেন্দ্র করে কোন কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই ২০১৭ সালে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চূড়ান্ত বরখাস্ত না করা, পদ শূন্য ঘোষণা না করা এবং শিক্ষাবোর্ডকে না জানিয়ে বিধিমালা লঙ্ঘন করে ম্যানেজিং কমিটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক রকিবুলকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর সভাপতি কৌশলে প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগসাজশে স্কুলের ভবন বিক্রি, ভর্তি বাণিজ্য, মাটি ভরাটের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ অবস্থায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ মহামান্য হাইকোর্টে রিটপিটিশন দাখিল করেন। হাইকোর্টের বিচারপতি এনায়েতুর রহিম ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান গত ২৪ জুন দ্বৈত শুনানি শেষে আপিল আর বেট্টিশন বোর্ডে দুই পক্ষের শুনানি অন্তে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।

সে মোতাবেক রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড দুপক্ষের শুনানি শেষে চলতি বছরের ৩০জুন আব্দুল মজিদ স্কুলের বৈধ প্রধান শিক্ষক হিসাবে বহাল রহিয়াছেন এবং তার প্রধান শিক্ষক পদে দায়িত্ব পালনে কোন বাধা নেই। তাহাকে বকেয়া বেতন ভাতাদিসহ প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য স্কুলের সভাপতিকে নির্দেশ দেন। কিন্তু সভাপতি চিঠি গ্রহণ না করে উল্টো নানা ষড়যন্ত্র করেন। প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ যেন যোগদান করতে না পারেন এ জন্য বর্তমান প্রধান শিক্ষক রকিবুলের সাথে যোগসাজশে লোক ভাড়া করে করোনার মধ্যে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করেন। হাইকোর্ট এবং শিক্ষা বোর্ডের আদেশ অমান্য করে স্কুলে যোগদানে বাধা দেয়ার জন্য মানববন্ধন করায় স্কুলের অভিভাবক ও শিক্ষকের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্কুল ছাত্রী খাদিজা খাতুন নানী জানান, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এহসানুল হক সন্টু ও বর্তমান প্রধান শিক্ষক রকিবুলের নানা অনিয়মের কারণে স্কুলের পড়াশোনার মান একেবারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগে যেখানে স্কুলটি শিক্ষার মানের দিক দিয়ে রাজশাহী বিভাগের সেরা দশে ছিল এবং জেলার মধ্য প্রথম ছিল সেখানে মাত্র দুই বছরে শিক্ষার মান তলানিতে পৌঁছেছে। আমরা অভিভাবকরা দেখেও ভয়ে কিছু বলতে পারছি না। প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন ভাল শিক্ষক প্রয়োজন। তাদের দুর্নীতি ঢাকতেই একজন ভালমানের প্রতিষ্ঠাতাকালীন প্রধান শিক্ষককে যোগদানে বাঁধা দিচ্ছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ভাল শিক্ষক যোগদান না করলে অভিভাবকরাও শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে।

অভিভাবক আব্দুল মোতালেব জানান, বর্তমানে শিক্ষার মান এতটাই খারাপ যে মেয়েকে স্কুল থেকে ফিরিয়ে আনতে পারলে বাঁচি। বর্তমানে যারা দায়িত্বে আছে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো প্রশাসনিক কোন দক্ষতা নেই। পড়াশোনা বাদ রেখে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসে মেতে ওঠেছে চক্রটি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ জানান, হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে সম্পূর্ণ প্রভাব খাটিয়ে সভাপতি আমাকে যোগদান করতে দিচ্ছে না। সভাপতি তার দুর্নীতি-অপকর্ম ঢাকার জন্য নানা ষড়যন্ত্র করতে আমাকে যোগদানে বাঁধা দিচ্ছে। তিনি আরো জানান, আদেশটি স্থগিতের জন্য সভাপতি আদালতে গেলেও ভার্চুয়াল কোর্ট কোন আদেশ না দিলেও নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এ অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতিমুক্ত করতে সভাপতির অপসারনসহ যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আরও পড়ুন : গাজীপুরে নেশাগ্রস্ত ছেলের হাতে পিতাসহ একই পরিবারের ৩জন আহত

এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এহসানুল হাসান সন্টু অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, হাইকোর্ট চার মাসের জন্য নিয়োগ স্থগিত করেছে। আর নিয়মিত কোর্টে শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন। তবে আদেশের কপি দেখাতে পারেননি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড