• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এবার হাজারো মানুষের যাতায়াতের দুঃখ ঘুচবে

  গাইবান্ধা প্রতিনিধি

২৯ আগস্ট ২০২০, ২৩:২৯
সাঁকো
নির্মাণাধীন সাঁকো (ছবি : দৈনিক অধিকার)

বহু বছর ধরে জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দফতরে ধরনা দিয়েও গাইবান্ধার জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বুড়াইল খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণ হয়নি। ঠিক এই সময় স্থানীয় ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবীর উদ্যোগে স্ট্রাট ফান্ড বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় ও বেসরকারি সংস্থা এসকেএস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ৩০০ ফুট দৈর্ঘ্যের কাঠের সাঁকো নির্মাণ করছেন গ্রামবাসী।

অনেকের কাছেই সাঁকোটি স্বপ্নের মতো। এ জন্য গ্রামের কেউ দিয়েছেন বাঁশ, আবার কেউ দিয়েছেন টাকা, কেউবা দিচ্ছেন শ্রম। সংঘবদ্ধভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সাঁকো নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছেন তারা। কাঠের সাঁকোটি নির্মাণ হলে আশপাশের অন্তত ৭ হাজার মানুষের যাতায়াতের পথ উন্মুক্ত হবে।

শনিবার (২৯ আগস্ট) বিকাল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাসহ প্রায় শতাধিক মানুষ নদীর পাড়ে সাঁকো নির্মাণে জড়ো হয়েছেন। কেউ বাঁশ কাটছেন, কেউ কাঠে পেরেক মারছেন, কেউবা পানিতে নেমে গাছের খুঁটি মাটির নিচে পুতে দিচ্ছেন। সবমিলিয়ে যেন সেখানে এক উৎসব চলছে।

সাঁকো নির্মাণকাজে যোগ দেওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা একটি বন্যাকবলিত এলাকা। গেল বন্যায় বাঁশের এই সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকাবাসীর চলাচলের চরম দুর্ভোগে পড়ে। এই পথ দিয়ে খোর্দ্দা, চরর্খোদ্দাসহ প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ চলাচল করে। একই পথে গ্রামের শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাথমিকসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। কিন্তু এখানে সাঁকো না থাকায় তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কলার ভেলায় করে নদী পার হয়।

বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় না, ফলে অকালে মৃত্যুর প্রহর গুনতে হয় তাকে। কৃষকরা কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহন করতে না পারায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। এ নিয়ে বিভিন্ন দফতর ঘুরেও কাজ না হওয়াই গ্রামবাসী ও বেসরকারি সংস্থা নদী পারাপারের জন্য সাঁকো নির্মাণের এই উদ্যোগ নেন।

নির্মাণকাজে আসা মকবুল হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরা নদীর ওপারে স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে। সাঁকো না থাকায় তাদের কলার ভেলায় করে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। ফলে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পারে না। সেই সাথে দুর্ঘটনার শঙ্কায় থাকতে হয়। তাই এসকেএস ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সাঁকোটি নির্মাণের কাজ চলছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাঁকোটি কয়েকটি গ্রামবাসীর চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সাঁকোটি নির্মাণ হলে বহু মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ কমে আসবে।’

আরও পড়ুন : নিজ পেশাই জীবন নিল মেকানিকের

এ ব্যাপারে এসকেএস ফাউন্ডেশনের ফোকাল পারসন জামাল উদ্দিন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘বন্যার্তদের জন্য এসকেএস নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে আমরা সাঁকোটির নির্মাণকাজ করছি। দুই দিনের মধ্যে সাঁকোটি নির্মাণ হয়ে যাবে। একই সাথে দুর্যোগ ও ঝুঁকি হ্রাসের জন্য অন্যান্য কাজও করে যাচ্ছে সংস্থাটি। সাঁকোটি নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর যাতায়াতের দুর্ভোগ অনেক কমবে।’

এ দিকে, এলাবাসীর দাবি- সাঁকোটি নির্মাণ হলে অনেক সুবিধা হবে ঠিকই কিন্তু কাঠের সাঁকো বেশি মজবুত ও টেকসই নয়। বেশি লোকের যাতায়াত করার কারণে অল্পদিনেই চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তাই স্থায়ীভাবে একটি সেতু নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়েছেন তারা।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড