অধিকার ডেস্ক
গরু চুরির অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ে বৃদ্ধ মাসহ তার যুবতী মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে মারতে মারতে এলাকায় ঘুরিয়েছে স্থানীয় লোকজন। পরে সেখান থেকে তাদের হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এনে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গরুর মালিক ও হারবাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. মাহবুবুল হক বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় ওই দুই নারী, অজ্ঞাত সিনএজি চালকসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে পাঁচজনই কারাগারে রয়েছেন।
এ দিকে, মা-মেয়েকে কোমরে রশি বেঁধে প্রকাশ্যে এলাকা ঘোরানোর ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ঘটনাটি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে মারতে মারতে নিয়ে যেতে দেখা যায়। এ সময় ভিডিওতে ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারকেও দেখা গেছে।
এ বিষয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসীরা জানায়, আটকের পর গরু চোরদের পেটানো ও রশি দিয়ে বেঁধে প্রকাশ্যে ঘোরানোর খবর পাওয়ার পর হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিরানুল হক গ্রাম্য চৌকিদার পাঠিয়ে জনতার রোষানল থেকে তাদের উদ্ধার করে পরিষদে নিয়ে আসেন। এরপর তাদের হারবাং ফাঁড়ির পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। পরে গরুর মালিকের দায়ের করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। একপর্যায়ে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চুরির মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাম্মদ ছুট্টু (২৭), চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার কুসুমপুর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিরহাট এলাকার শহীদের কলোনীর পারভীন আক্তার (৪০), ছেলে মো. এমরান (২১), মেয়ে সেলিনা আক্তার শেলি (২৮) ও রোজি আক্তার (২৩)। এর মধ্যে মোহাম্মদ ছুট্টু ছাড়া তিন নারী ও দুই পুরুষ একই পরিবারের সদস্য।
বিষয়টিতে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পারসিত চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ি আর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন পাশাপাশি। লোকজন ওই মা-মেয়েসহ সবাইকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসলে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে একটি স্প্রে’র বোতল, বাট ছাড়া একটি ছোরা, একটি কালো স্কচটেপ, একটি মোবাইল ও গাড়ির চাবি জব্দ করা হয়। পরে এ ঘটনায় গরুর মালিক বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় মামলা করলে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান জানান, গরু চুরির ঘটনা যেমন অপরাধ, তেমন আইনের দৃষ্টিতেও গর্হিত অপরাধ নারীর প্রতি অমানবিকতা। তাই কারা নারীদের ওপর এমন গর্হিত কাজ করেছে, তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন পুলিশেরে এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন : সুনামগঞ্জে ডোবায় পড়ে ভাই-বোনের মৃত্যু
এ দিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে এই ঘটিনাকে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড