বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার তালতলীতে জোর করে বাল্যবিয়ে দেওয়াইয় ২০ দিন পরে আত্মহত্যা করেন সাবিনা আক্তার (১৭) নামের এক কলেজ ছাত্রী। এ আত্মহত্যার জেরে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) দুপুরের পরে রান্না ঘরের চালরের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই কলেজ ছাত্রী। তিনি তালতলী সরকারী কলেজে একাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছিলেন। তিনি উপজেলার সকিনা এলাকার মজনু হাওলাদারের মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের শুরুর দিকে উপজেলার সকিনা এলাকার মজনু হাওলাদারের মেয়ে সাবিনা আক্তার সাথে একই ছোটবগী ইউনিয়নে ঠংপাড়া এলাকার জালাল মৃধার ছেলে মিজানুরের সঙ্গে প্রায় ২০ দিন আগে পারিবারিকভাবে মেয়ের মতামত ছাড়াই জোরপূর্বক বিয়ে দেয় চাচা শহিদ ও বাবা মজনু। বিয়ের পর থেকেই সাবিনা স্বামীর বাড়িতে যাবে না বলে পরিবারকে জানিয়ে দেন। তবুও জোর করে তাকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয়। একবার যাওয়ার পর আবারও স্বামীর বাড়ি যেতে না চাইলে সাবিনার উপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। এক পর্যায় সাবিনা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয় বলে জানান তার পরিবার। আত্মহত্যার পর উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নিহত সাবিনার বোন সাওয়দা আক্তার বলেন আমার বোন পড়ালেখা করতে চেয়েছিল কিন্তু আমার চাচা শহিদ ও বাবা মজনু জোর করে বাল্যবিয়ে দেয়। এই বিয়েতে আমাদের পরিবারের বাবা ছাড়া আমরা কেউ জানি না। আমাদের মতামত ছাড়াই বিয়ে দেন তারা। কিন্তু পরে আমার বোন স্বামীর বাড়িতে যেতে চায়নি কিন্তু তাকে বাধ্য করা হয়েছে। আমার বোনকে স্বামীর বাড়ি পাঠাতে মানসিক চাপ দেওয়াতে সে আত্মহত্যা করেন। আমি বিয়ের বিষয়ে প্রতিবাদ করলে আমাকেও আমার চাচা মারধর করেন। আমার বোনের আত্মহত্যার পেছনে আমার চাচা ও বাবা জড়িত। আমি আমার বোনের হত্যার বিচার চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক লোক বলেন, সাবিনার ১৮ বছর হয়নি, সে কলেজে পড়ে। তাকে জোর করে বাল্যবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বিয়ের পেছনে সাবিনার চাচা ও বাবা জড়িত। তারা জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়াতে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থার দাবি করছি।
এ বিষয়ে সাবিনার চাচা অভিযুক্ত শহিদ বলেন, বিয়ে দেওয়া হয়েছে মেয়ের মতামতের বিরুদ্ধে। মেয়ে তার স্বামীর বাড়িতে না যাওয়ার কথা বললে কিছুটা রাগারাগি করা হয়েছে। তবে পরে তালাকের ব্যবস্থাও করা হয়েছে কিন্তু তার আগেই সাবিনা আত্মহত্যা করে। আর সাবিনার বোনকে মারধরের বিষয় অস্বীকার করে বলেন রাগারাগি করা হয়েছে মাত্র। তার আত্মহত্যার জন্য আমি কেন জড়িত থাকবো। আমি কিছু জানি না।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, আত্মহত্যার পরে তাকে আমতলীতে নেওয়া হয়েছে। সেখানকার থানা পুলিশ একটা অপমৃত্যুর মামলা নিয়ে লাশ ময়না তদন্তর জন্য বরগুনা পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড