রিয়াদ হোসাইন, মুন্সীগঞ্জ
নীতিমালা লঙ্ঘন করে মুন্সীগঞ্জ জেলায় যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের সিলিন্ডার। এদিকে যত্রতত্র এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তারা বলেন, নীতিমালা লঙ্ঘন করে দাহ্য পদার্থ বিক্রির ফলে যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ও দাহ্য পদার্থ থেকে আগুনে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। একই আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ পৌর এলাকা, মাকহাটি বাজার, শিলই বাজার, মুন্সীরহাট, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় বাজার, কামারখাড়া বাজার এলাকায় ওষুধের দোকন, বিপণী বিতান, মুদির দোকান, ক্রোকারিজের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের দোকানে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করার জন্য রাখা হয়েছে। এছাড়া টঙ্গীবাড়ী উপজেলার হাসাইল বাজার, বালিগাঁও বাজার, ধীপুরসহ প্রভৃতি এলাকায় মুদি ও রকমারি দোকানে পেট্রলের পাশাপাশি দাহ্য পদার্থ বিক্রি করা হচ্ছে। তাদের অধিকাংশের কোনো ধরনের লাইসেন্স নেই। নেই বিস্ফোরক অধিদপ্তরের ছাড়পত্র।
আরও পড়ুন : সিনহা হত্যা : রিমান্ডে থাকা ৭ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাচ্ছে
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারি বিধি মোতাবেক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধা পাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইসেন্সসহ অগ্নিনির্বাপণ সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকতে হবে। একজন ব্যবসায়ী এ সকল শর্ত পূরণ করলেই কেবল নিবন্ধন পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন। এ ব্যাপারে কয়েকজন এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা সরকারি অনুমোদন পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। এখনও সে অনুমোদন মেলেনি। ট্রেড লাইসেন্স দিয়েই তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শহরের মুদি দোকানি বিল্লাল হোসেন বলেন, তিনি দোকানের ট্রেড লাইসেন্সের আবেদন করেছেন। এলপি গ্যাস সিলিন্ডারের বিক্রিতে লাইসেন্সের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তার দাবি, এ বিষয়ে কোনো গ্যাস কোম্পানির লোকজন তাকে কিছু বলেননি। তার দোকানে দুটি গ্যাস কোম্পানির ১৯টি গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে।
দিঘীরপাড় বাজারের একজন গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সারা দিনে দু-একটা সিলিন্ডার বিক্রি করি। এ আইন সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। লোকজনের চাহিদা থাকায় ডিলারদের কাছ থেকে গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে এসে বিক্রি করেন বলে তিনি জানান।
স্থানীয় সচেতন মহলের শেখ রাসেল ফখরুদ্দিন বলেন, এসব দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা না করায় দিন দিন বেড়ে চলেছে এই ব্যবসা। শুধু গ্যাসের সিলিন্ডার নয় পাশাপাশি কোমল পানীয়র পুরোনো বোতলে ভরে পেট্রল বিক্রি করা হচ্ছে। এসব দোকানের পেট্রলের ক্রেতাদের অনেক দোকানি চেনেন না বা জানেন না। এটি খুবই বিপদজনক। দুষ্কৃতকারীদের হাতে পেট্রল চলে যেতে পারে।
মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আবু বক্কর জামান বলেন, গ্যাসের সিলিন্ডারের ব্যবসা করলে অবশ্যই তাকে লাইসেন্স নিতে হবে। নীতিমালা মেনে ব্যবসা করতে হবে। সড়কের ধারে সাজিয়ে রেখে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা খুবই বিপজ্জনক। এ ছাড়া যত্রতত্র পেট্রল বা দাহ্য পদার্থ বিক্রির কারণে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সাধারণত পরিপূর্ণ লাইসেন্স বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে নিতে হয়।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের লাইসেন্স নীতিমালা অনুযায়ী দাহ্য পদার্থ বিক্রির সুনির্দিষ্ট বিধিমালা রয়েছে। যত্রতত্র বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড