• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুন্সীগঞ্জে তালিকা নেই অনুমোদনহীন মেয়াদোত্তীর্ণ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের

  মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

১৩ আগস্ট ২০২০, ১১:০৬
মুন্সীগঞ্জ
মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়

বেসরকারিভাবে হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ল্যাব পরিচালনা করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন কার্যালয়সহ আরও কয়েকটি সরকারি দপ্তর থেকে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক।

তবে কাগজে-কলমে এমন নিয়ম থাকলেও মুন্সীগঞ্জ জেলা অনেকটাই ভিন্ন চিত্র দেখাযায়। তদারকি না থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জেলার শহর ও উপজেলাগুলোতে দেখা মেলে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের।

এখান থেকে সাধারণ মানুষ সেবা নিলেও মান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। ভুয়া ডাক্তার, ভুল রিপোর্ট, অপারেশনের ত্রুটির কারণে রোগী মৃত্যুর খবর হরহামেশা ছড়িয়ে পড়ে। কোনো ধরনের তদারকি না থাকায় নিয়ম না মেনেই দিনের পর দিন এসব প্রতিষ্ঠান সেবা দিয়ে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগেরই লাইসেন্স থাকলেও হালনাগাদ বা নবায়ন নেই। যার ফলে একটি পক্ষকে ম্যানেজ করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দেদার চিকিৎসা বাণিজ্য চলছে।

এদিকে, জেলার ছয় উপজেলায় যত্রতত্র অনুমোদনহীন-মেয়াদোত্তীর্ণ হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার থাকলেও মুন্সীগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এসব প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট কোনো তালিকা নেই। লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় জেলার অলিগলিতে গড়ে উঠেছে অনেক চিকিৎসা কার্যক্রম। এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ইচ্ছামতো বাণিজ্যিক মনোভাব নিয়ে পরিচালনা, গলাকাটা ফি আদায় করাসহ নানা অভিযোগও রয়েছে গ্রাহকদের।

বুধবার (১২ আগস্ট) বিকালে মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানাযায়, জেলা অনুমোদিত হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে ৯২টি। এরমধ্যে এ বছর তিনটি হাসপাতাল তাদের লাইসেন্স নবায়ন করেছেন। এছাড়াও অন্যান্য হাসপাতালগুলো নবায়ন করার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ে প্রয়োজনী কাগজ-পত্র নিয়ে ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছেন । তবে, অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা থাকলেও কতটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নেই তার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এছাড়া গত বছর লাইসেন্স নবায়ন না করা প্রতিষ্ঠানগুলোরও আলাদা কোনো তালিকা সংরক্ষণ নেই সিভিল সার্জন কার্যালয়ে।

এদিকে নিয়ম মানার বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব স্বাস্থ্য প্রশাসনের । কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান কীভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, তা তদারকিতেও নেই কোনো দৃশ্যমান মনিটরিং কার্যক্রম। প্রশাসনের তদারকি না থাকার সুযোগে অনেকে আবাসিক এলাকায় কিংবা নিজের থাকার ঘরের মধ্যেই গড়ে তুলেছেন হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিক। যেখানে নেই সনদপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষিত কোনো ল্যাব এক্সপার্টও।

অভিযোগ আছে, জেলা শহর ও উপজেলায় যত্রতত্র স্বাস্থ্যসেবার নামে হাসপাতাল-ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়মিত নজরদারি করে না। অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলে প্রতিষ্ঠানগুলো। রোগীর কাছ থেকে ইচ্ছামতো ফি আদায় করার অভিযোগও আছে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পান না বলে অভিযোগও করেন না। ফলে লাগামহীন মনোভাব নিয়েই পরিচালিত হয় বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুন্সীগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক মো. আক্কাস আলী বলেন, ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়নে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও নারকোটিকস সহ অফিসিয়ালি অভ্যন্তরীণ কিছু জটিলতা রয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সাল থেকে অনলাইনে নবায়ন কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে নবায়ন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে আবেদন করে রেখেছেন কিন্তু নবায়ন হয়নি এখনো। এছাড়া তিনি আরো বলেন, তার অ্যাসোসিয়েশনের সব প্রতিষ্ঠানকে সব নিয়মকানুন মেনে নিয়ে নবায়ন কার্যক্রম করার জন্য জানিয়েছেন।

মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলায় অনুমোদনহীন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা আপতত নেই। তবে সরকারের নির্দেশনা মতে আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে নবায়নের জন্য বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অনুমোদনের কাজ শেষ না করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন : পাইলসের রোগীকে পিত্তথলীর অপারেশন! মুমূর্ষু অবস্থা

প্রসঙ্গত, গত রবিবার সচিবালয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে এক সভা শেষে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালের সনদ নবায়ন করতে হবে। যাদের লাইসেন্স নবায়ন নেই তাদের আবেদন করতে হবে। আবেদন না করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া কী কারণে তাদের লাইসেন্স নেই সেটাও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড