নরসিংদী প্রতিনিধি
সহোদর দুই বোনকে বিয়ে করেও জৈবিক চাহিদা নিবৃত করতে না পেরে নরসিংদীতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে শ্যালকের স্ত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়েছেন স্থানীয় মসজিদের সভাপতি হোসেন মিয়া (৪৬)।
শুক্রবার (১০ জুলাই) দুপুর ৩টার দিকে নরসিংদীর মাধবদী থানাধীন মৈশাদী কান্দাপাড়া গ্রামে এই শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে।
এ ঘটনায় শ্লীলতাহানির শিকার তিন সন্তানের জননী রুমা আক্তার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নরসিংদীতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলো- মাধবদী থানাধীন ডৌকাদী গ্রামের হোসেন মিয়া (৪৬) ও বাদীর স্বামী ওমর ফারুক (৪০)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার কুমরাদী গ্রামের আব্দুর রহমানের মেয়ে রুমা আক্তারের সাথে ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাধবদীর মৈশাদী কান্দাপাড়া গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে ওমর ফারুকের বিয়ে হয়। এরপর তাদের ঘর আলোকিত করে ফারহানা (১৪), ইফরান (৯) ও দ্বীন ইসলাম (৫)।
তবে বিয়ের পর থেকেই রুমার স্বামীর ভগ্নিপতি হোসেন মিয়া তাকে বিভিন্নভাবে কু-প্রস্তাব দিতে থাকলে সে বিষয়টি তার স্বামীকে জানায়। কিন্তু তার স্বামী ওমর ফরুক এতে কর্ণপাত না করে বরং একই ছাদের নিচে সহোদর দুই বোনকে নিয়ে বসবাস করা ভগ্নিপতির পক্ষে সাফাই গাওয়া শুরু করেন।
একপর্যায়ে শুক্রবার (১০ আগস্ট) দুপুর ৩টার দিকে তার ওমর ফারুকের ভগ্নিপতি হোসেন মিয়া রুমার শ্বশুরালয়ে এসে তাকে একা পেয়ে জড়িয়ে ধরে জোরপূর্বক শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।
পরে কৌশলে তার কবল থেকে ছুটে পালিয়ে বাড়ির উঠানে চলে যায় রুমা। পরে বিষয়টি স্বামীকে খুলে বললেও ওমর ফারুক তাতে কর্ণপাত না করে উল্টো রুমাকে শাসিয়ে বলে, ‘তার (হোসেন মিয়া) ঘরে আমার দুই বোন রয়েছে। তোর জন্য আমি আমার বোনদের সংসার নষ্ট করতে পারব না। তুই তার কথায় রাজী হয়ে তার চাহিদা পূরণ করে দে। তা না হলে তোকে নিয়ে আমি সংসার করতে পারব না।’
একপর্যায়ে স্বামীর কাছে বিচার না পেয়ে অবশেষে ওমর ফারুক ও তার ভগ্নিপতি হোসেন মিয়ার বিচারের দাবিতে আদালতে মামলা দায়ের করেন রুমা।
রুমা আক্তার অভিযোগ করেন, মামলার পর থেকে প্রধান আসামি হোসেন মিয়া তাকে বিভিন্ন ধরনে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। তার ক্রমাগত হুমকির মুখে বাধ্য হয়ে ৩ ছেলে মেয়েকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে শিবপুরে বাবার অভাবের সংসারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন তিনি। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
তবে অভিযুক্ত হোসেন মিয়ার বলেন, ‘আমাকে ফাঁসানোর জন্য রুমা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করেছে। তাছাড়া মামলার তারিখের পূর্বে ও পরে আমার দুই মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। মামলার তারিখের দিন আমি শেখেরচরে আমার বিয়াইর বাড়িতে ছিলাম।’
আরও পড়ুন : মুয়াজ্জিনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন, মূল হোতা আটক
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এলাকার স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত মো. পনির মিয়া দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘হোসেন মিয়া এতটাই লম্পট যে, তার লালসা থেকে তার আপন শ্যালিকাও রেহাই পায়নি। শালিকার সঙ্গে অবৈধ মেলামেশার কারণে সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য বহু চেষ্টার পরও সফল হতে না পেরে অবশেষে সামাজিক চাপে হোসেন মিয়া তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। তাছাড়া তার কারখানার শ্রমিকদের সাথেও অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক রয়েছে। এ নিয়ে দুই জন শ্রমিক প্রতিবাদ করলে ইদের পূর্বে তাদের বেতন থেকে দুই হাজার করে টাকা কেটে রেখে কাজ থেকে বিদায় করে দেয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড