• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঈশ্বরদীতে শেষ মুহূর্তে ক্ষতির আশঙ্কায় খামারিরা

  ঈশ্বরদী প্রতিনিধি, পাবনা

২৯ জুলাই ২০২০, ১০:৩২
ঈশ্বরদী
পর্যাপ্ত পশু আমদানি হলেও এবার কোরবানির পশু কেনার তোড়জোড় নেই

তিনদিন পরই ইদুল আজহা বা কোরবানির ইদ। কিন্তু করোনা মহামারীর প্রকোপে ঈশ্বরদী হাটগুলোতে পর্যাপ্ত পশু আমদানি হলেও এবার কোরবানির পশু কেনার তোড়জোড় নেই।

ঈশ্বরদী উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বড় ঈশ্বরদীর অরনকোলা পশু হাট, আওতাপাড়া পশুর হাট ও নতুনহাট এলাকার ছাগলের হাটে বিপুল সংখ্যক গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ উঠলেও ক্রেতার অভাবে জমে উঠেনি কেনাবেচা। করোনার ভয়ে ক্রেতারা হাটে না যাওয়ায় খামারিরা বিপুল ক্ষতির আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। অনলাইনে ও অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ করে তারা পশু বিক্রির চেষ্টা করছেন। তেমন সাড়া পাচ্ছেন না।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, ঈশ্বরদীতে ছোট-বড় মিলে ২ হাজার ৩৩৭ জন খামারি আছেন। তাদের হাতে বিক্রয়যোগ্য (ষাঁড়, বলদ ও গাভী) ১৬ হাজার ৬৫ টি, মহিষ-৩৭১, ছাগল-১৭ হাজার ২৮৭ এবং ভেড়া রয়েছে ১ হাজার ৭৯৬ টি কোরবানির উপযোগী করা হয়।

ঈদ ঘনিয়ে আসায় মাত্র কয়েক দিনে উপজেলার হাটে বিক্রির জন্য হাজার হাজার পশু তুলছেন খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা। সারা বছর পুষে বড় করা গরুগুলো তারা এই কোরবানি মৌসুমে বিক্রির জন্য রেখেছেন। এখন হাটে গরু নিয়ে অপেক্ষার পরও ক্রেতা পাচ্ছেন না অনেক খামারি। ফলে আর্থিক ক্ষতির দুশ্চিন্তায় দিন গুনছেন। তবুও আশা, বুধবার আওতাপাড়া পশুর হাটে ক্রেতা আসবে।

সাহাপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম নামে এক খামারি বলেন, বর্তমানে পশুর খাদ্যের চড়া মূল্য। এছাড়া অন্যান্য খরচ মিলে গরু পালনে ব্যয় বেড়েছে। তবে করোনার প্রকোপ না থাকলে এই সময়ে হাটে ক্রেতা সমাগম বেশি হতো। আর এতেই তারা পুষিয়ে নিতে পারতেন। কিন্তু এ বছর হাটে বিপুল সংখ্যক কোরবানির পশু উঠলেও আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত ক্রেতার দেখা সেভাবে পাচ্ছেন না খামারিরা।

উপজেলার কৈকুন্ডা গ্রামের মৌসুমি গরু ব্যবসায়ী শাহীন আলম বলেন, কোরবানিযোগ্য তার ১৫টি বড় গরু আছে। এমন আকারের গরু প্রতি বছর অরনকোলা হাটে কিনে বেপারিরা ঢাকা ও চট্টগ্রামে চালান করতেন। বড় গরু স্থানীয়ভাবে বিক্রি হয় না। কিন্তু এবার করোনার কারণে এসব বড় গরু কেনায় আগ্রহী ক্রেতা বা বেপারির দেখা মিলছে না। পরিস্থিতি যা তাতে হয়তো অর্ধেক দামেই এসব গরু বিক্রি করতে হবে। কারণ কোরবানিতে এসব গরু বিক্রি না হলে পরে আর বিক্রি করা যাবে না। ফলে তাদের ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় এবার প্রায় ১৭ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু মজুদ রয়েছে। প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে ঈশ্বরদী থেকে প্রায় ৬ হাজারের বেশি কোরবানির পশু ঢাকা ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে চালান হয়। কিন্তু এবার করোনার কারণে বাইরের বেপারিদের আনাগোনা ঈশ্বরদীতে বেশ কম। এতে গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা বেশ চিন্তায় আছেন। তাই আমরা পরামর্শ দিচ্ছি বড় গরু বা খামারে বড় করা গরু যেন অনলাইনে বিক্রির চেষ্টা করেন তারা। এতে যদি তারা গরুর ন্যায্য মুল্যটা পান।

এদিকে হাটে ক্রেতা সংকটের কারণ হিসেবে অরণকোলা পশু হাটের ইজারাদার আলহাজ্ব মিজানুর রহমান রুনু মণ্ডল বলেন, করোনায় মানুষের আয়-উপার্জন প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। মধ্যম শ্রেণির মানুষই সাধারণত ঈদে গরু কোরবানি দেন ভাগাভাগি করে। এবার তাদের হাতে টাকা নেই। ফলে হাটে আসছেন না। যারা প্রতি ঈদে একাধিক গরু কোরবানি দেন তারাও হাটে অনুপস্থিত। কিছু মানুষ আসছেন, তারা কম দামের ছোট গরু কেনার চেষ্টা করছেন। বড় গরু তেমন বিক্রি নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন : ঈশ্বরদীতে বিপুল পরিমাণ চোলাই মদসহ গ্রেপ্তার ৯

রুনু মণ্ডল আরও বলেন, প্রতি বছর তার হাটে শুধু ঈদ উপলক্ষে ১২ হাজার গরু কেনাবেচা হয়। এবার পরিস্থিতি বেশ খারাপ। আজকের শেষ হাটে কেনাবেচার পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে হিসাব করলে বোঝা যাবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড