• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মসজিদ মিশন একাডেমীর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

  রাজু আহমেদ, রাজশাহী

২৮ জুলাই ২০২০, ১০:৫৮
রাজশাহী
মসজিদ মিশন একাডেমী

রাজশাহী নগরীতে অবস্থিত মসজিদ মিশন একাডেমীর (স্কুল এ্যন্ড কলেজ) অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটি গঠনে জালিয়াতি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এমন প্রতারণার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত শিক্ষকসহ সকল কর্মচারীরা দীর্ঘ চার মাস বেতন থেকে বঞ্চিত থাকতে হয়েছে। এমনকি এখন পর্যন্ত তাদের বেতন অনিয়মিত।

এবিষয়ে প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশ মসজিদ মিশন নামের একটি সংস্থার অধীনে পরিচালিত হচ্ছে মসজিদ মিশন একাডেমী (স্কুল এ্যন্ড কলেজ)। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তদারকির জন্য সাত সদস্যের একটি গভর্নিং বডি থাকবে। সাত জনের মধ্যে একজন সভাপতি থাকবেন যিনি সংস্থাটির সভাপতি কর্তৃক মনোনীত হবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সদস্য সচিব হবেন পদাধিকার বলে প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল। এছাড়া দুই জন শিক্ষক ও তিনজন অভিভাবক থাকবেন কমিটিতে। তবে প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ সংস্থার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে তিনি নিজের পছন্দসই গভর্নিং বডির সভাপতি সহ তিনজন অভিভাবকের নাম দিয়ে কমিটির অনুমোদন করিয়েছেন।

গত বছরের ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী কলেজের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ আব্দুল হান্নানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি করে একটি চিঠি ইসু করেন বাংলাদেশ মসজিদ মিশন সংস্থার সভাপতি মু. নুরুল ইসলাম। তবে ১২ ডিসেম্বর নুরুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল করে বাংলাদেশ পুলিশের একজন সাবেক এসপি খন্দকার হাবিবুর রহমানকে সভাপতি মনোনীত করে আরেকটি চিঠি ইস্যু করেন মসজিদ মিশন একাডেমীর প্রিন্সিপাল নুরুজ্জামান খান। এর পর তিনি সুকৌশলে সভাপতি সহ নিজের পছন্দ মতো তিন জন অভিভাবক ও দুই জন শিক্ষকের নাম দিয়ে গত ১২ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অনুমোদনের জন্য সেখানে প্রেরণ কনের। কোনপ্রকার যাচাই বাছাই ছাড়াই তিন দিনের ব্যবধানে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক যা অনুমোদন দেয় ১৫ জানুয়ারি তারিখে।

বিষয়টি জানাজানির পর ওই দিনই বাংলাদেশ মসজিদ মিশন সংস্থার সভাপতি মু. নুরুল ইসলাম রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিন অভিযোগ করেন। যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, মসজিদ মিশন একাডেমীর প্রিন্সিপাল নুরুজ্জামান খান গভর্নিং বডির ৭ সদস্যের কমিটির মধ্যে সভাপতি সহ তিনজন অভিভাবকের নাম অনুমোদনের ক্ষেত্রে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। প্রিন্সিপাল সংস্থাটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে নিজের পছন্দসই ব্যক্তিদের নামগুলো দিয়েছেন।

এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠির মাধ্যমে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) সচিব আবু হায়াত মো: রহমতুল্লাহকে ওই গভর্নিং বডির কমিটি তৈরিতে জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে অনুরোধ করে। এর প্রেক্ষিতে রাসিকের সচিব গত ৫ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। যেখানে তিনে জানান প্রিন্সিপাল নুরুজ্জামান খান সংস্থার সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে কমিটি অনুমোদনের জন্য নিজের পছন্দের ব্যক্তিদের নাম দেন। এমন অবস্থায় তার কাছে উক্ত কমিটি অবৈধ বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এর পর ১ জুন তারিখে প্রিন্সিপাল নুরুজ্জামান খান বরাবর কৈফিয়ত তলব করে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক।

এদিকে জালিয়ারিত আশ্রয় নিয়ে গভর্নিং বডি অনুমোদনের বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতদের বেতন আটকে যায়। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত এই ৪ মাস শিক্ষক ও কর্মচারীরা কোন বেতন তুলতে পারেননি। পরে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতি নিয়ে এবং তার স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে তাদের বেতন তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তবে জুন মাসের বেতন ব্যাংকে পড়ে থাকলেও এখন পর্যন্ত তারা তা তুলতে পারেননি।

আরও পড়ুন : কুড়িগ্রামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণ

এবিষয়ে কথা বলতে মসজিদ মিশন একাডেমীর (স্কুল এ্যন্ড কলেজ) প্রিন্সিপাল নুরুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। আর জালিয়াতির আশ্রয়ে প্রিন্সিপালের মনোনীত সভাপতি হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি দাবি করে জানান, তাকে সংস্থার সভাপতি অনুমোদন দিয়েছেন। তবে শিক্ষকদের একটি পক্ষ নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড