সারাদেশ ডেস্ক
মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনের আওয়ামী লীগের দলীয় এমপি ইসরাফিল আলম। সোমবার বাদ আছর তিন দফা জানাযা নামাজ শেষে ৮টা ১০ মিনিটে নিজ জন্মভূমি নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঝিনা গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মা’র কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
রাজধানী ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। সোমবার সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
১৯৬৬ সালে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম হয় এমপি ইসরাফিল আলমের। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে নির্বাচনী আসন রাণীনগর-আত্রাই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তার জানাযা নামাজে নওগাঁ জেলা সদর আসনের এমপি ব্যারেস্টার নিজাম উদ্দীন জলিল জোন, সাবেক এমপি আব্দুল মালেক, জেলা প্রসাশক হারুন অর-রশিদ, পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান, রাণীনগর-আত্রাই এলাকার দলীয় নেতাকর্মী, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, প্রসাশন এবং সর্বস্তরের লোকজন অংশ নেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বেশকিছু দিন ধরে ফুসফুস, কিডনি এবং ডায়াবেটিস জনিত রোগে শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করছিলেন এমপি ইসরাফিল আলম। এর মধ্যে তার মা এসেদা রহমান মারা যাওয়ায় তিনি আরো ভেঙ্গে পড়েন। এরই মধ্যে তিনি আবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে পড়ায় তার শারীরিক অসুস্থতা বেড়ে যায়। এরপর ৬ জুলাই চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে ১৪ জুলাই তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয় এবং ১৫ জুলাই করোনার ফলাফল তার নেগেটিভ আসে। ১৭ জুলাই তিনি আবারো অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে আবার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২৪ জুলাই রাতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় তার। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিনই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তিন দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর সোমবার সকালে মারা যান তিনি। এরপর বেলা তিনটা নাগাদ ঢাকা থেকে একটি হেলিকপ্টারযোগে তার মরদেহ নিয়ে রাণীনগর হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। সেখান থেকে গাড়িযোগে মরদেহ জন্মভূমি ঝিনা গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়।
তার মৃত্যুতে রাণীনগর উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠন, উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক রোকনুজ্জামান রুকু, রাণীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাসহ সর্বস্তরের জনগণ গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এমপি ইসরাফিল আলম তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে চাকরি করার সময় শ্রমিকলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ঢাকা মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন বিএনপি জোটের মন্ত্রী আলমগীর কবীরের কাছে পরাজিত হন। এরপর আবার ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জোটের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বুলুকে পরাজিত করার পর চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি রাজনীতিতে আত্মনিয়োগ করেন তিনি। নির্বাচিত হবার পর শক্তহাতে সবহারা ও জেএমবি দমন করেন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে আবারও বিএনপি জোটের প্রার্থী আলমগীর কবীরকে পরাজিত করে তৃতীয় বারের মত সাংসদ নির্বাচিত হন ইসরাফিল আলম। এছাড়া নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় ফেডারেশনের সভাপতি ও শ্রম মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। তার পিতা মরহুম আজিজুর রহমান ছিলেন এলাকার কৃষক আন্দোলনের নেতা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড