• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পোরশায় ভুয়া ছোলেনামা করে ১শ বিঘা জমি জবরদখলের অভিযোগ!

  কাজী কামাল হোসেন, নওগাঁ

২৬ জুলাই ২০২০, ১৫:১২
নওগাঁ

নওগাঁর পোরশায় জাল সোলেনামা ও মিথ্যা মামলার নাটক করে প্রায় ৩৩ একর জমি জবরদখলের পায়তারা করার অভিযোগ অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত আব্দুল রহিম শাহ্ মারা গেলেও তার ছেলে ও ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পেশিশক্তির প্রভাবে প্রতি বছর ফসল কেটে ঘরে তুলছেন। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী মৃত আমিন শাহের ছেলে আব্দুল্লাহ চৌধুরী নওগাঁ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন, কিন্তু এখনও কোন প্রতিকার পাননি।

অভিযোগকারী জানান, পৈত্রিক ভিটামাটি পোরশায় থাকলেও ব্যবসার কাজে রাজশাহী শহরে সপরিবারে বসবাস করতেন আবদুল্লাহ চৌধুরীর বাবা মৃত আমিন শাহ। ভাই ও ভাতিজাদের উপর অগাধ সরল বিশ্বাস ছিলো তাঁর। বিপরীতে পরবর্তীতে চরম বিশ্বাসঘাতকতার শিকার হয়েছেন আমিনশাহ্ এর ছেলেমেয়েরা। তাদের প্রায় ৩৩ একর জমি আদালতের ভুয়া সোলেনামা তৈরি করে দখলে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ। এছাড়া আদালতে মামলার মিথ্যা নাটক সাজিয়ে হয়রানি করার অভিযোগও করেন তারা।

আব্দুল্লাহ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, জালিয়াতি ও ভুয়া ছোলেনামা (বাটোয়ারা দলিল) তৈরি করে তাঁর বাবা মৃত আমিন শাহের জমি জবর দখলে নেয়ার চেষ্টা শুরু করে চাচা আব্দুর রহিম শাহ। আব্দুর রহিম মারা যাবার পর তারই ছেলেসহ অপর ভাইয়েরা আব্দুস সামাদ, আব্দুল হালিম ও আব্দুল লতিফসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা লাঠিয়াল বাহিনী ও পেশিশক্তির প্রভাবে সেই জমিগুলো থেকে প্রতি বছর ফসল লুট করে নিয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠকে বসেও কোন প্রতিকার করতে পারেনি স্থানীয় পোরশা উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুর মোরশেদ চৌধুরী। প্রশাসনের কাছে একাধিকবার ধর্না দিয়েও বাপদাদার সূত্রে প্রাপ্ত জমির ফসল রক্ষা করতে পারেনি ভূমি দস্যুদের হাত থেকে বলে অভিযোগ করেন আব্দুল্লাহ চৌধুরী। বিষয়টি স্বীকার করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুর মোরশেদ চৌধুরী। দলিল জালিয়াতি প্রমাণিত হওয়ার পরও কোন সুবিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। তারা জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, এমনকি জেলা প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকের কাছে বিষয়টির সুরাহা চেয়ে যেমন লাভ হয়নি, অন্যদিকে পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থেকে জেলা পুলিশের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা পুলিশ সুপার পর্যন্ত আকুতি জানিয়েও কোনো সহযোগিতা বা ন্যায় বিচার পাননি তারা। ফলে ক্রমেই চরম হতাশ হয়ে পড়ছেন আমিন শাহের উত্তরাধিকাররা।

চাচা এবং চাচাতো ভাইদের লোভ লালসাকে ঠেকাতে গত ২০১৮ সালের ৩ মে আব্দুল্লাহ চৌধুরী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর হলে তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ধারা মোতাবেক অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। জানানো হয়, ছোলেনামাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং এর অস্তিত্ব আদালতের কোথাও পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র ভুয়া ছোলেনামাটির একটি ফটোকপিকে ব্যবহার করে তারা প্রতিবছর জমির ফসলকাটার এই তাণ্ডব দেখান।

আব্দুল্লাহ চৌধুরী আরো জানান, প্রতিপক্ষের হুমকি-ধামকিতে অন্যান্য ভাই-বোন ও স্বজনদের নিয়ে তিনি শঙ্কিত ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল হালিম শাহের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে কোনো পরে জানাবেন বলে উল্টো প্রতিবেদককে পত্রিকার নাম, সাংবাদিকতার বয়স, ইত্যাদি বিভিন্ন প্রশ্নবানে অস্থির করে ফেলেন।

নওগাঁর পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান জানান, মামলাটি আদালতে থাকায় বিষয়টি নিয়ে কোন সুরাহা করার এখতিয়ার নেই পুলিশের। তবে বিষয়টি নিয়ে যাতে আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ না হয় তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট পোরশার থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন : জয়পুরহাটে পিস্তল ও গুলিসহ আটক ২

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো: হারুন অর রশিদ বলেন, বাদী আব্দুল্লাহ চৌধুরী জেলা প্রশাসনে কোনো অভিযোগ দিয়েছেন কিনা তা জানা নেই। তবে আদালতে মামলা থাকলে স্থানীয় প্রশাসন নয়, আদালতই সমাধান করবেন। আর জালিয়াতি ও জোর করে ফসল কাটার ঘটনা ঘটলে থানা পুলিশ পদক্ষেপ নিবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড