দেবহাটা প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় পুলিশি তৎপরতায় মানসিক ভারসাম্যহীন আমিনুল খুঁজে পেল তার পরিবারকে। দীর্ঘ ১৪ মাস পর পরিবারকে খুঁজে পেয়ে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহার প্রচেষ্টায় প্রায় ১৪ মাস আগে হারিয়ে যাওয়া আমিনুলকে শনিবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে দেবহাটা থানার ওসির অফিস রুমে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আমিনুল সিলেটের ওসমানিনগর থানার মোবারকপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে। সিলেটের ওসমানিনগর থানার মোবারকপুর এলাকা থেকে সে ১৪ মাস আগে হারিয়ে যায়।
আমিনুলের বাবা নুরুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে জানান, আমিনুল ছিল মেধাবী শিক্ষার্থী। সিলেটের একটি মাদরাসা থেকে আলিম পাশ করে আমিনুল। কিন্তু পারিবারিক অস্বচ্ছলতা ও বিভিন্ন মানসিক চিন্তায় আমিনুলের মাঝে বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় ১৪ মাস আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয় সে। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।
এই ১৪ মাসে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলায় ঘুরে সপ্তাহ খানেক আগেই পাগলপ্রায় বেশে দেবহাটাতে পৌঁছায় আমিনুল। এরপর থেকেই সে অবস্থান করছিল সখিপুর মোড় ও আশপাশের এলাকায়। মানুষের দেয়া খাবার খেয়ে রাস্তার পাশে কিংবা অন্যের দোকানের সামনে পড়ে থাকত। গত বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) আমিনুলের সন্ধান চেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মী নাজমুল হোসেন ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিলে বিষয়টি নজরে আসে পুলিশের। পরে তাৎক্ষণিকভাবে দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহার নির্দেশে আমিনুলকে থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ।
একপর্যায়ে ফেসবুক মারফত জানা যায় আমিনুলের বাড়ীর ঠিকানা। এরপর থেকে আমিনুলকে তার পরিবারের কাছে ফেরত পাঠাতে দফায় দফায় ওসমানিনগর থানায় যোগাযোগ করেন দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা। ওসমানিনগর থানা থেকে হারানো ছেলের খবর দিয়ে পুলিশ পাঠিয়ে খবর দেওয়া হয় আমিনুলের বাড়িতে। কিন্তু হতদরিদ্র হওয়ায় আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ছেলেকে ফেরত নিতে দেবহাটা থানায় আসতেও বিপাকে পড়ে আমিনুলের বাবা।
একপর্যায়ে দেবহাটা উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের সাথে আলোচনা করে আমিনুল ও তার বাবার যাতায়াতের খরচের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি আমিনুলের পাশে দাড়ায় দেবহাটার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মৃত্তিকা মানবিক ইউনিট। সবশেষ শনিবার সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে আমিনুলকে তার বাবা নুরুল ইসলামের হাতে তুলে দেন দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অধীর কুমার গাইনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন : পঞ্চাশোর্ধ্ব দম্পতিকে পিটিয়ে জখম
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অধীর কুমার গাইন এ সময় তাদের যাতায়াত খরচ বাবদ তিন হাজার টাকা দেন। এছাড়া আমিনুল ও তার বাবাকে ইদের নতুন জামা কাপড় ও কিছু আর্থিক সহায়তা দেন মৃত্তিকা মানবিক ইউনিট। বহুদিন পর হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে ভরে ওঠে আমিনুলের বাবা নুরুল ইসলামের বুক। পাশাপাশি বাবাকে ফিরে পেয়ে হাসি ফোটে আমিনুলের মুখে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড