মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদীর পানি বেড়ে মুন্সীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পদ্মার পানি বেড়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
শনিবার (২৫ জুলাই) জেলার ভাগ্যকূল পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ও মাওয়া পয়েন্টে ৭২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার (২৪ জুলাই) সকালে ভাগ্যকূল পয়েন্টে ৬.৭৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পদ্মা নদীর পানি প্রবাহিত হয়েছিল।
নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পদ্মা সংলগ্ন জেলার চারটি উপজেলা সদর, টঙ্গিবাড়ী, লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। একই সঙ্গে ডুবে গেছে ঘরবাড়ি-রাস্তাঘাট। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৮ হাজার পরিবার। এছাড়া ইতোমধ্যেই বেশকিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। এতে বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে বানভাসি মানুষরা।
এ দিকে, মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে- উজান থেকে নেমে আসা স্রোতের কারণে পদ্মায় আগামী কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে- লৌহজং, টঙ্গীবাড়ী, শ্রীনগর ও সদর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ১৫৪টি গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। এতে বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২৭ হাজার ৭৫০ টি পরিবার। জেলায় এখন পর্যন্ত ৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হলেও আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন মাত্র ৩৬৫টি পরিবার।
বন্যার পানিতে প্লাবিত পদ্মার চরের গ্রামগুলোর বসতবাড়িতে কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও বুক সমান পানি। এসব বসতবাড়িতে থাকা মানুষজনের সঙ্গে বিপদে পড়েছে তাদের গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগিও। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঘরের মাচা উঁচু করলেও পানিবন্দি হয়ে চরম বিপাকে দিন কাটাতে হচ্ছে বানভাসি পরিবারগুলোকে।
বন্যার ফলে টঙ্গিবাড়ী ও লৌহজং উপজেলায় নদী ভাঙন বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যেই মসজিদ, কবরস্থানসহ অনেক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পাশাপাশি বন্যা কবলিত গ্রামগুলোতে বর্তমানে বিশুদ্ধ পানি ও গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী টিএম রাশেদুল হাসান দৈনিক অধিকারকে বলেন, কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে জেলার নদ-নদীতে পানির চাপ বাড়ছে। তবে পানি বাড়লেও আগস্ট মাসে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ত্রাণের জন্য হাহাকার
অন্যদিকে, মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দ্বীপক কুমার রায় দৈনিক অধিকারকে জানান, এখন পর্যন্ত বানভাসি পরিবারদের সহায়তায় ২২০ মেট্রিক টন চাল, ৩ হাজার ১শ’ বন্যার্ত পরিবারের জন্য শুকনো খাবার, শিশু খাদ্যের জন্য ১ লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জিআর ক্যাশ হিসাবে আরও ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড