• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

করোনার প্রভাবে দিশেহারা পিরোজপুরের পাল সম্প্রদায়

  ইমন চৌধুরী, পিরোজপুর

১৯ জুলাই ২০২০, ১৪:০৪
পিরোজপুর
করোনার প্রভাবে দিশেহারা পিরোজপুরের পাল সম্প্রদায়

একদিকে করোনার প্রভাব অন্য দিকে নদী ভাঙন। এই দুই মহামারীতে থেমে গেছে পিরোজপুরের কুমোর সম্প্রদায়ের কয়েক’শ পরিবারের অর্থনৈতিক চাকা। গেল প্রায় ২-৩ মাস ধরে তাদের উৎপাদিত পণ্য কেনার জন্য দেখা মিলছে না কোন ক্রেতার। এতে করে চরম আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে দিন কাটছে এ সম্প্রদায়ের মানুষের। ক্ষতিগ্রস্ত মৃৎশিল্পীরা চান সরকারি সহযোগিতা।

পিরোজপুর সদর থেকে চার কিলোমিটার দূরে মূলগ্রাম। এ গ্রামের সড়কের পাশে এক বর্গকিলোমিটার জুড়ে অবস্থিত পালপাড়া। দুইশত বছরের পুরানো পালপাড়ায় বর্তমানে ১৫০টি পরিবার বসবাস করছে। প্রতিটি পরিবার মৃৎ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। সারা বছরই এসব এলাকায় নারী ও পুরুষেরা মাটি দিয়ে তৈজসপত্র তৈরি করে সময় পার করেন। চাক ঘুরিয়ে মাটির টালী, ফুলের টব, বাসন, চিতই পিঠার সাজ তৈরি করে থাকে। স্থানীয়ভাবে তৈরি জিনিসপত্রগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাইকারি ক্রেতারা তাদের কাছ থেকে কিনে নেন। তবে এ বছর সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ায় দেখা নাই কোন ক্রেতার। ফলে অনেকটাই বন্ধ রয়েছে সকল রকমের বিক্রি।

আর এ দুর্যোগ কবে কাটবে এ নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। পালপাড়ার মৃৎশিল্পী সিতা রানী, শংকর ও নারায়নরা জানান, নিজেদের যতটুকু পুঁজি ছিল তার সবটুকুই ইতোমধ্যে ব্যয় হওয়ায়, পুঁজির সংকটে পড়েছেন এ পেশার সাথে জড়িত কয়েক’শ পরিবার।এখন সরকারি আর্থিক সহযোগিতা না পেলে বিলুপ্তির পথে যাবে মৃৎশিল্প।

এদিকে জেলার কাউখালী উপজেলার সন্ধানদীর পাড়ে গড়ে ওঠা শোনাকুর গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পাল সম্প্রদায়ের তিনশত পরিবার সবাই এ কাজের সাথে জড়িত। তবে একদিকে করোনার প্রভাব অন্য দিকে অব্যাহত নদী ভাঙন। দুই মহামারীতে মৃৎশিল্প গ্রাম খ্যাত কাউখালীর পালবাড়ি এখন অনেকটাই ক্ষতির মুখে। ফলে হাড়াতে বসেছে বাঙালির শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য নিজ হাতে বানানো মাটির তৈরি সুন্দর ও সৃষ্টিশীল প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র। প্রায় ৩৫বছর ধরে সন্ধ্যানদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের কারণে প্রায় বিলুপ্তির পথে পাল সম্প্রদায় ।

স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা জানান, সন্ধ্যানদীর পাড়ে প্রায় শত বছর ধরে মাটির তৈরি সুন্দর তৈজসপত্র বানিয়ে আসছি। তবে বছরের পর বছর ধরে নদী ভাঙন আছে। সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। একদিকে নদী ভাঙন অন্য দিকে করোনা ভাইরাস। আমাদের চলার মত কোনো অবস্থা নাই।

তবে চেম্বার অব কমার্স’ এর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা নকীব জানান, চেম্বার অব কমার্স’এর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে যোগাযোগ করে মৃৎশিল্পের সাথে সংশিল্টদের সহায়তা করা হবে। আর নদী রক্ষাবাধ নির্মাণ করে মৃৎশিল্প রক্ষা করার আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসন আবু আলী মো.সাজ্জাদ হোসেন ।

২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প রক্ষায় কার্যকারী পদক্ষেপ ও সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন এ পেশার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড