গাইবান্ধা প্রতিনিধি
মুঠোফোন চুরির ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করায় প্রতিশোধ নিতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় নাঈম ইসলাম (৭) নামে এক শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার (১৭ জুলাই) গভীর রাতে বাপরাজ (১৪) নামে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে একই দিন বিকালে উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী (ডাংহাট) গ্রামে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু নাঈম পশ্চিম ছাপড়হাটী গ্রামের মিলন মিয়ার ছেলে এবং অভিযুক্ত কিশোর একই গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৭ মাস আগে এলাকার একটি মুঠোফোন চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার কিশোর বাপরাজকে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রাম্য শালিসির মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়। ওই দিন নিহত শিশুর বাবা ওই কিশোরকে মারধর করে। মোবাইল চুরি না করেও তাকে শালিসে মারধর করায় ওই পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টায় থাকে কিশোর বাপরাজ।
সম্প্রতি সে ঢাকা থেকে বাড়ি আসার পর নানানভাবে তাদের ক্ষতি করার সুযোগ খোঁজে। একপর্যায়ে শুক্রবার বিকালে শিশু নাঈমকে দেখতে পেয়ে কৌশলে পাশের একটি মাঠে খেলতে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ খেলাধুলার পর ওই শিশুটিকে খেজুর খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে ও পাখির বাসা পেড়ে দেবে বলে নির্জন একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে নাঈমকে নিয়ে যাওয়ার পর শিশুটির ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় বাপরাজ। নির্যাতনে শিশুটি গুরুতর আহত হলে ওই জঙ্গলের ভেতরে থাকা পুকুরে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় বাপরাজ।
পরে শিশুটি সাতার না জানায় পানিতে ডুবে মারা যায়। একপর্যায়ে শিশুটির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ওই কিশোর। এ দিকে, ঘটনার কিছুক্ষণ পর শিশুটির খোঁজ না পেয়ে মাইকিং করে তার পরিবার। এরপর সে মাইকিং শুনে বাড়িতে গিয়ে তার ফুফুর কাছে ঘটনা খুলে বলে কিশোর বাপরাজ। কিন্তু বাপরাজের পরিবার বিষয়টি ঠাট্টা মনে করে উড়িয়ে দেয়।
পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই কিশোরকে খুঁজে বের করে নিহতের পরিবার। একপর্যায়ে কিশোরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ দিকে, লাশ উদ্ধারের পর ব্যস্ত থাকার সুযোগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কিশোর বাপরাজ। পরে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতেই মজুমদার হাট থেকে ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন : পুঁতে রাখা লাশের সন্ধান দিল কুকুর!
পরবর্তীকালে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিশোর বাপরাজ হত্যার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ময়না তদন্তের জন্য পুলিশ নিহতের লাশ মর্গে পাঠায়।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহিল জামান দৈনিক অধিকারকে বলেন, ‘শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিষয়টিতে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চলছে’।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড