• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ময়মনসিংহে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা

  ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

১৮ জুলাই ২০২০, ১১:৩৯
ময়মনসিংহ
আটককৃতরা (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় প্রেম করে পালিয়ে বিয়ের পর যৌতুকের জন্য খোদেজা আক্তার সুমিকে (২০)নামে এক গৃহবধূকে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলায় স্বামী বিল্লাল হোসেন (২৫) ও শ্বাশুড়ি কুলসুম বেগম (৫০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৭ জুলাই) গ্রেফতারকৃত আসামি স্বামী বিল্লাল হোসেন এবং তার মা কুলসুম বেগমকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।

স্থানীয় ও নিহতের পরিবারের মামলা সূত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার সাহাপুর (তাতারকান্দা) গ্রামের মৃত কাশেম আলী ওঝার মেয়ে খোদেজা আক্তার সুমি প্রেম করে পালিয়ে গিয়ে প্রায় দুই বছর আগে পাশ্ববর্তী তারাকান্দা উপজেলার কাকনী ইউনিয়নের তেয়ারকান্দি গ্রামের হাসু মিয়ার ছেলে ইটভাটা শ্রমিক বিল্লাল হোসেনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর কিছুদিন পর থেকেই স্বামীর বাড়িতে স্বামী-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন তাকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। পিতৃহারা সুমি ভাইদের কাছ থেকে টাকা এনে দিতে পারবে না বলে জানালে প্রায়ই মারধর করা হতো তাকে। গত তিন সপ্তাহ আগেও মারধরের কারণে বাবার বাড়িতে চলে যায় সুমি। তখন স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মধ্যস্থতা করে সুমিকে সংসারে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে আনে স্বামী বিল্লাল হোসেন।

পরে গত ৯ জুলাই রাতে স্বামী-শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হয় সুমির। পরদিন শুক্রবার (১০ জুলাই)সকালে সুমি নির্যাতনের ভয়ে ফের বাবার বাড়ি চলে যাওয়ার চেষ্টা কালে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে তাকে ঘরের মধ্যে আটকে পেট্রোল দিয়ে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। এসময় সুমির চিৎকারে আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠায়। পরে মমেক হাসপাতালের চিকিৎসক সুমির শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)হাসপাতালে বার্ণ ইউনিটে প্রেরণ করেন। সেখানে বুধবার(১৫ জুলাই) রাতে মৃত্যু হয় সুমির। পরে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) রাতে বাবার বাড়ি ফুলপুর উপজেলার সাহাপুর (তাতারকান্দা) গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয় সুমিকে।

নিহতের বড় ভাই ও মামলার বাদি কাউসার হোসেন উজ্জল জানান, 'দুই বছর পূর্বে খোদেজা আক্তার সুমি প্রেমের টানে পালিয়ে বিয়ে করে পাশ্ববর্তী তারাকান্দা উপজেলার তেয়ারকান্দি গ্রামের হাসু মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেনকে। এরপর থেকেই যৌতুকের জন্য খোদেজাকে যৌতুকের জন্য মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে স্বামী বিল্লাল হোসেন। গত শুক্রবার সকালে যৌতুকের জন্য খোদেজা আক্তার সুমিকে নিয়ে বকাঝকা ও মারধর করে। এসময় সুমি মারধর করার ভয়ে প্রয়োজনীয় জামা-কাপড় নিয়ে বাবার বাড়ী যেতে চাইলে পেছন থেকে পেট্রোল ছিটিয়ে বিল্লাল হোসেন আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই পাষন্ডরা সুমিকে জীবিত আসতে দেয়নি। আমি বোন হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি চাই।'

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবুল খায়ের বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) নিহতের বড় ভাই কাউসার হোসেন উজ্জল বাদী হয়ে চারজনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।মামলার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে স্বামী বিল্লাল হোসেন ও শ্বাশুড়ি কুলসুম বেগমকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শুক্রবার (১৭ জুলাই) আদালতে পাঠানো হয়। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড