• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কুড়িগ্রামে ‘বাংলার রাজা’ : দাম হাঁকানো হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা

  কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

১৭ জুলাই ২০২০, ১৪:২৫
কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রামে ‘বাংলার রাজা’

ইদকে ঘিরে যখন সারাদেশে ব্যতিক্রমধর্মী গরুর পশরা নিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া খবরের যোগান দিচ্ছে। আগ্রহীদের জোগাচ্ছে আলোচনার খোড়াক। সেখানে পিছিয়ে থাকবে কেন কুড়িগ্রাম জেলা। এবার উত্তরের এই সীমান্ত ঘেঁষা বানভাসি জেলার একটি গ্রামে অস্ট্রেলিয়ান শংকর জাতের একটি ষাঁড় এলাকার মানুষের আগ্রহের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে তোলার পর শুরু হয়েছে তোলপাড়। জেলায় এত বড় গরু কেউ কোনদিন প্রতিপালন করেছে কিনা তাই নিয়ে চলছে হিসেব নিকেশ। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আগ্রহী মানুষ ও ক্রেতারা ষাঁড়টি দেখতে ভিড় জমাচ্ছে বাড়িটিতে। মালিক দাম হাঁকিয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। নাম রেখেছে ‘বাংলার রাজা’। ষাঁড়টি বাংলার রাজা কিনা তা জানা না গেলেও সেটি যে কুড়িগ্রাম জেলার রাজা হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সাদা-কালোর উপরে শারীরিক রঙের ষাঁড়টি যখন হেঁটে চলে তখন বিশাল দেহে ঢেউ খেলে যায়। শিশুরা ভয়ে কাছ ঘেঁষতে চায় না। ঘরের বাইরে আনলে অপরিচিত পরিবেশে প্রথমে হিংস্রভাবে ফোঁস ফোঁস করে নি:শ্বাস ছোঁড়ে। চোখ পাকিয়ে শিং দিয়ে মাটি খুড়ে শান্ত হয়। খাবারের সময়েও রয়েছে তার রাজকীয় ভাব। এমন স্বভাবের কারণে তার নাম রাখা হয়েছে ‘বাংলার রাজা’।

ষাঁড়টির মালিক কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা গ্রাম মানিককাজীর বাসিন্দা উমর আলীর ছোট ছেলে জয়নাল আবেদীন। প্রায় সাড়ে ৪ বছর ধরে ষাঁড়টি লালন পালন করছে সে। বেশ কয়েক বছর আগে দুধের যোগান দিতে একটি গাভী কেনেন। সেই গাভীর পেটে বাংলার রাজা’র জন্ম। নিতান্ত শখের বসে ষাঁড়টি লালন পালন করা শুরু করেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান শংকর জাতের ষাঁড়টি ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এখন তার ওজন প্রায় ২৪ থেকে ২৫ মন। দৈত্যাকার ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য ১২ ফিট। উচ্চতা ৬ ফিট। অর্থনৈতিক কারণে পরিবারের সদস্য হিসেবে বেড়ে ওঠা বাংলার রাজাকে এবার বিক্রি করতে চাচ্ছেন তিনি। দাম হাঁকিয়েছেন ১৫ লক্ষ টাকা।

কুড়িগ্রামের ‘বাংলার রাজা’

জয়নাল আবেদীন জানান, সম্পূর্ণ দেশী খাবার দিয়ে ষাঁড়টি লালন পালন করেছেন তিনি। কখনো মোটাতাজাকরণ ঔষধ কিংবা রাসায়নিক কোন খাবার দেননি। শুধুমাত্র কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাইয়েছেন। সাড়টিকে দৈনিক খাবার হিসেবে ধানের গুড়ো, গমের ভুষি, খড় আর ঘাস খাইয়েছেন। ঘাসের যোগান দিতে এক বিঘা জমিতে উন্নতজাতের নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছেন। সব মিলিয়ে বাংলার রাজা’র জন্য দৈনিক ৪ থেকে ৫শ’ টাকার খাবার যোগান দিতে হয়।

প্রতিবেশী সোহরাব, আজাহার আলী ও আজম মিয়া জানান, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে আমাদের সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামে লোকজন আসতে পারে না। জয়নাল আবেদীন অনেক অর্থ ব্যয় আর কষ্ট করে ষাঁড়টি বড় করেছে। করোনা আর বন্যার কারণে এতদূরে কোন ক্রেতা আসতে পারছে না। ফলে ষাঁড়টি বিক্রি করতে তাকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তবে সবাই আশাবাদী ন্যায্য মূল্যে ষাঁড়টি বিক্রি করতে পারবেন জয়নাল আবেদীন।

বাংলার ষাঁড় নিয়ে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. কে,এম ইফতেখারুল ইসলাম জানান, জয়নাল আবেদীন সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ষাঁড়টিকে প্রতিপালন করছেন। আমরা নিয়মিত খোঁজ খবর এবং পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি ন্যায্য মূল্যে তিনি গরুটি বিক্রি করতে পারবেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড