কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রসহ সবকটি নদ-নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দ্বিতীয় দফায় বন্যার কবলে পরেছে এই জনপদের মানুষ।
শনিবার (১১ জুলাই) ধরলা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ৭ ও তিস্তা নদীর পানি ২ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৮ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এসব নদীও রাতেই বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ দিকে, পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের নিচু চরগুলো আবারও তলিয়ে যাচ্ছে। চর পার্বর্তীপুরের ছকমল ও তহিজল দৈনিক অধিকারকে জানান, ‘দুদিন হয় ফিরেছি। বাড়িঘর ঠিকঠাক করে একটু স্বস্তি নেব তারও উপায় নেই। আবারও পানি বাড়ন্ত। পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে।’
অন্যদিকে পৌরসভা এলাকার চর ভেলাকোপার মহিতুল, আর্জিনা ও মিয়াজন বিবি জানান, ‘কেবলমাত্র ঘরদুয়ার ঠিকঠাক করছি। আঙিনার কাদো এ্যালাও শুকায় নাই। ফির বাড়িত পানি উঠপের নাগছে। কন তো এ্যালা কী করি?’
এমন দুর্ভোগ ছড়িয়ে পরছে ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদনদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলগুলোতে। টানা ১২দিনের প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় দফা বন্যার আগমনে আশংকা আর আতংক বিরাজ করছে এসকল মানুষের মধ্যে। যে সকল কৃষক জেগে ওঠা পাট কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারাও বিপাকে পড়েছেন। সবজি মাঠেই ধ্বংস হয়ে গেছে। আর যারা পানি নেমে গেলে দ্বিতীয়বার আমন বীজতলা করার পরিকল্পনা করছিলেন তারাও হতাশ। এ জন্য পানি বাড়ার ফলে নদ-নদী সংলগ্ন এবং চরাঞ্চলে প্লাবিত এলাকার মানুষজন আবার নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে জানান, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আরও দুটি ভারী বৃষ্টিপাত বয়ে যাবে এ অঞ্চলের উপর দিয়ে। ফলে দু’একদিনের মধ্যে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে আবারও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে।
আরও পড়ুন : দুই মিনিটের আকস্মিক ঝড়ে লণ্ডভণ্ড পুরো গ্রাম
অন্যদিকে, কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম দৈনিক অধিকারকে জানান, ‘কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে ইতোমধ্যেই জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান উপস্থিত ছিলেন। ইতোমধ্যে আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। পাশাপাশি সভায় জেলা ও সকল উপজেলার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রস্তুত করে রেখেছি। বন্যায় যখন যা প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবে তাই করা হবে।’
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড