• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সিরাজগঞ্জে বানভাসিদের পাশে কেউ নেই

  সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

০৫ জুলাই ২০২০, ১০:৪৮
সিরাজগঞ্জ
দুই মহাদুর্যোগে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন কাটছে বানভাসিদের

পাঁচ থেকে সাতদিন যাবত পানিবন্দী থাকলেও কেউ সহায়তার হাত বাড়ায়নি সিরাজগঞ্জে বানভাসিদের দোরগোড়ায়। একদিকে করোনায় কর্মহীন অন্যদিকে বন্যা। দুই মহাদুর্যোগে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন কাটছে বানভাসিদের। আগাম বন্যার কারণে বেঁচে থাকার সম্বল তিল, কাউন, ধান, পাট, সজ ও সবজি হারিয়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় পড়ছে তারা।

অন্যদিকে, অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে এক সময়ের সম্পদশালী পরিবারগুলো। মাথা গোজার ঠাইয়ের জন্য ছুটতে হচ্ছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। পৈত্রিক ভিটা-ফসলি হারিয়ে অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে কোনমতে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভাঙ্গন কবলিতরা। এতো দুর্যোগে থাকলেও কেউ সাহায্যের হাত বাড়ায়নি এসব মানুষের কাছে। এ নিয়ে বন্যা ও ভাঙ্গনকবলিত মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

জানা যায়, যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় ৩৩টি ইউনিয়নের প্রায় ২১৬টি গ্রামের ২৫ হাজার পরিবারের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চার শতাধিক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সাড়ে তিন হাজার হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। ১৬ কিলোমিটার রাস্তা নষ্ট হয়ে পড়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে এনায়েতপুর, শাহজাদপুর ও চৌহালীর বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ফসলি জমি ও পৈত্রিক ভিটা হারিয়ে পথে বসছে এক সময়ের সম্পদশালী পরিবারগুলো। কিন্তু কেউ ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এমনকি একটু সহানুভূতিও কেউ দেয়ার জন্য তাদের পাশে দাঁড়ায়নি।

যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৫সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে

অন্যদিকে, কোথাও দশদিন আবার কোথাও সাতদিন যাবত মানুষ পানি বন্দী থাকলেও সরকারী কোন সহায়তা বানভাসিদের কাছে পৌঁছেনি।অনেকে বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতরজীবন যাপন করছে। আর প্রশাসন বলছে, নিচু এলাকায় প্লাবিত হবে এটা স্বাভাবিক-এই অজুহাতে কোন ত্রাণ তৎপরতা শুরু করা হয়নি। আর বন্যাকবলিতরা বলছে, মানুষ ইচ্ছে করে নিচু এলাকায় বসবাস করে না। পরিস্থিতির শিকার হয়ে নিচু এলাকায় বসবাস করে। নিচু এলাকার মানুষ বন্যায় তলিয়ে গেলেও সরকারের টনক নড়ে না। তাহলে কি নিচু এলাকার মানুষ মানুষের মধ্যে পড়ে না?

কাওয়াকোলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান টি.এম. শাহাদত হোসেন ঠান্ডু জানান, চরাঞ্চল এমনিতেই নিচু। পানি বাড়লেই ফসল তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। চরাঞ্চলের মানুষকে প্রতিনিয়ত বন্যা ও খরার সাথে যুদ্ধ করে বাঁচতে হয়। এ জন্য প্রতি বছর বন্যাকালীন দুর্যোগের সময় চরা লের মানুষের জন্য সরকারের বিশেষ বরাদ্দ দেয়া প্রয়োজন। যাতে বন্যাকালীন সময়ে চরা লের বন্যাকবলিত মানুষ তাদের সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহমেদ জানান, এখনো বন্যার তেমন প্রভাব পড়েনি। তারপরেও প্রতিটি উপজেলায় চাউল ও নগদ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তালিকা প্রস্তুত করে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড