নওগাঁ প্রতিনিধি
রাত তখন ৮ টার কাছাকাছি। পাহাড়পুরের এই এলাকাটা এমনিতেই সুনসান নীরব হয়ে পরে সন্ধ্যার পর। তাতে আবার করোনা মহামারীর এই ক্রান্তিকাল।
পাহাড়পুর থেকে জামালগঞ্জ যাওয়ার রাস্তা। হঠাৎ করেই পথচলতি মানুষের কানে আসে পাকুড় গাছের দিক হতে মানব শিশুর কান্নার শব্দ। হতচকিত মানুষগুলো আবিষ্কার করে ব্যাগের ভেতরে রাখা একটি জলজ্যান্ত ফুটফুটে মেয়ে বাচ্চা। যেন এক মানব শিশু নয় উন্মোচিত হয় মানুষের নিষ্ঠুরতার এক নারকীয় স্বরূপ। ৩/৪ দিন হতে পারে শিশুটির বয়স।
কে বা কারা এই নিষ্পাপ শিশুটিকে ফেলে রেখে গেছে অনিশ্চিত অন্ধকারে। স্থানীয় লোকজনের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে যায় পাহাড়পুর ফাঁড়ি ইনচার্জ। কোলে তুলে নেয় বাচ্চাটিকে। ফোন করে অবগত করেন নওগাঁর পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএমকে।
পুলিশ সুপার তৎক্ষণাৎ বাচ্চাটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা প্রদান করেন। বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে উদ্বেগ আর আশংকা নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে পাহাড়পুর ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. মনিরুল ইসলাম।
কর্তব্যরত ডাক্তার সুস্থতার ছাড়পত্র দিলে বাচ্চাটিকে নিয়ে দুধমাতার সন্ধান করেন তিনি। পরবর্তীতে পাহাড়পুর ফাঁড়ির পাশে একজন দুধমাতার খোঁজ পেয়ে এবং পুলিশ সুপারের পরামর্শক্রমে তার কাছে বাচ্চাটিকে জিম্মায় প্রদান করেন। মানবিক পুলিশ আবারও ত্রাতার ভূমিকায়।
সুকান্ত ভট্টাচার্য যেন বিবেক হয়ে জানালায় কড়া নাড়ে- "চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ প্রাণপণে পৃথিবীর সরাব জঞ্জাল এই বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।"
ঠিক এভাবেই নওগাঁর বলদগাছী উপজেলার ঐতিহাসিক পাহাড়পুর থেকে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়ার সার্বিক পরামর্শে শুক্রবার (৫ জুন) দিবাগত রাতে কন্যা নবজাতকটিকে উদ্ধার করে একজনের জিম্মায় রাখেন। মানবিক পুলিশ ঠিক যেন ত্রাতার ভূমিকায়!
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড