রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
রাঙ্গামাটিতে দাপিয়ে বাড়ছে করোনার থাবা। এতে জনমনে বাড়ছে চরম উদ্বেগ আর ভয়ভীতি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় আরও কঠোর হচ্ছে প্রশাসন। এ নিয়ে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জেলায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা জোরদারসহ মাঠে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কঠোর অবস্থান নিতে বলা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, জেলা শহরে করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছেন, আরও ১৭ জন। মঙ্গলবার রাতে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে এ ১৭ জনের করোনা পজিটিভ ফল এসেছে। তাদের নমুনা চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে ১৪-১৫ মে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা রোগীর সংখ্যা ৪৩। এর আগে জেলায় ২৬ জনকে করোনা আক্রান্ত শনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে সুস্থ ৪ জন। হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন ৩ জন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসে করোনা বিষয়ক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা কামাল জানান, মঙ্গলবার রাতে হাতে পাওয়া নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনে নতুন করে আরও ১৭ জন করোনায় শনাক্ত হয়েছেন। তারা সবাই শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মোট ৪৩ জনকে করোনায় শনাক্ত করা গেছে। তাদের মধ্যে প্রথম আক্রান্ত ৪ জন সুস্থ হয়েছেন।
তিনি জানান, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন- শহরের রায় বাহাদুর সড়কের ৩ জন, উত্তর কালিন্দীপুরের ৩ জন, জেনারেল হাসপাতালের ২ জন, রাজবাড়ি এলাকার ১ জন, রাঙ্গাপানি এলাকার ১ জন, চক্রপাড়া এলাকার ১ জন, মানিকছড়ির ১ জন, কল্যাণপুরের ১ জন, তবলছড়ির মাঝেরবস্তি এলাকার ১ জন, ওমদা মিয়া পাহাড়ের ১ জন, ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির ১ জন এবং বনরুপা এলাকার ১ জন বেসরকারি চিকিৎসক। করোনা পরীক্ষার জন্য জেলা থেকে এ পর্যন্ত ৬৯১ জনের নমুনা পাঠানো হয়েছে। ফলাফল প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি ১৮০ জনের। আক্রান্ত এলাকা লকডাউন করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে রাঙামাটিতে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ করণীয় নির্ধারণে জরুরী সভা ডেকেছেন জেলা প্রশাসন। আজ বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদের সভাপতিত্বে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিষয়ে এক জরুরী অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার এক দিনে ১৭জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। এনিয়ে রাঙামাটিতে মোট-৪৩জনের দেহে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে।
সভায় উপস্থিত সকলের পরামর্শ ক্রমে মার্কেট বন্ধ রাখা,সিএনসি বন্ধ রাখা, দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রাখা,সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হবে না।শুধু মাত্র নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য,জরুরী সেবা,সংবাদপত্র,ফার্মেসী ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। বিনা কারণে কেউ ঘর থেকে বের হবেনা। এছাড়া জরুরী ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে প্রতিটি ওয়ার্ড ও মহল্লায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড ও মহল্লায় যে কমিটি গঠন করা হবে ওই সব ওয়ার্ড বা মহল্লার ওয়ার্ড কাউন্সিলরা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিষয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে তদারকি করবেন। তারা তদারকি করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে রিপোর্ট পাঠাবেন। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কঠোর অবস্থানে দায়িত্ব পালন করবেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে যতটুকু কঠোর হওয়ার দরকার তা হবেন প্রশাসন।
করোনা ভাইরাস নিয়ে জরুরী সভায় জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ বলেন,পূর্বের ন্যায় প্রশাসন আরো কঠোর হতে হবে। সংক্রমণ রোধে প্রশাসনের সবাইকে আরো কঠোর ভাবে কাজ করতে হবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া যেন কোন লোক ঘরের বাহিরে না যায় সে দিকে নজর রাখতে হবে। সবাই আরো বেশী বেশী সচেতন হতে হবে। ঘর থেকে বের হলেই মাক্স ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এব্যাপারে সেনাবাহিনী,পুলিশ,প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, ছোট খাটো রোগ নিয়ে আপাতত কেউ হাসপাতালে যাবেন না। বাহিরের কেউ যেন রাঙামাটিতে ঢুকতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি মেজর নাজমুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মইন উদ্দিন চৌধুরী,মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, পৌরসভার কাউন্সিলরগণ,বনরুপা,রিজার্ভ বাজার,কলেজগেট ও তবলছড়ি ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড