• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় আতঙ্ক

  বাগেরহাট প্রতিনিধি

১৯ মে ২০২০, ১৯:৩৯
বাগেরহাট
দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটস, সিপিপির মোট ১১ হাজার ৭০৮ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত

সুপার সাইক্লোনে রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বাগেরহাট জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সাথে হালকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের খবরে উপকূলের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। মানুষ সার্বক্ষণিক তাকিয়ে আছে আম্ফানের গতিবিধির দিকে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে ক্ষয়ক্ষতি যাতে কম হয় সেজন্য আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাওয়ায় জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আগের মতো লোক গাদাগাদি করে রাখা যাবেনা। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাখতে হবে। এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলার সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেজন্য ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রকগুলোর পাশাপাশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবনগুলো আশ্রয় কেন্দ্রে হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

জেলায় মোট ৯৭৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৫ লাখ ৯৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। ইতিমধ্যে সরকার এ জেলার জন্য ২০০ মে: টন চাল, নগদ ৩ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ. গো খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটস, সিপিপির মোট ১১ হাজার ৭০৮ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৫ টি মেডিকেল টিম। খোলা হয়েছে ১০টি কন্ট্রোল রুম।

এদিকে জেলার সকল উপজেলায় সকাল থেকে মাইকিং করে জনসাধারণকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মোংলা, শরনখোলা, রামপাল ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার জনসাধারণ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মানুষের পিছুটান এড়াতে মানুষের সাথে তাদের গবাদি পশুও আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে বয়স্ক, অসুস্থদের থাকার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে। কৃষি ও মৎস্য সম্পদ-সহ জানমালের সুরক্ষা এবং দুর্যোগ মুহূর্তে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার মানুষের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে চিড়া, গুড়, বিশুদ্ধ পানিসহ মোমবাতি ও দিয়াশলাই মজুদ রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, সিপিপির ইউনিট, রোভার স্কাউট, গালস গাউড, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষে সমন্বয় ১১ হাজার ৭শ ৮ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী উদ্ধার কাজের জন্য কুইক রেসকিউ টিম গঠন করা হয়েছে।

অপরদিকে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১১টি জাহাজকে বন্দরের মূল চ্যানেল থেকে সরিয়ে নিরাপদে রাখা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, বন্দরে সার, ফ্লাইএ্যাশ, কয়লাবাহীসহ মোট ১১টি দেশি বিদেশি জাহাজ অবস্থান করছে। বন্দরে অবস্থান নেয়া জাহাজ গুলোতে পণ্য ওঠা-নামার কাজ বন্ধ রয়েছে। জাহাজ গুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বন্দরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বন্দরের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বেলায়েত হোসেন জানান, বঙ্গোপসাগর সন্নিহিত বন বিভাগের ৩টি ক্যাম্প থেকে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সুন্দরবনে অভ্যন্তরে থাকা প্রায় দুই হাজার জেলে ইতিমধ্যে বনের বিভিন্ন নদী খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া বনের দুর্গম এলাকায় যে সকল বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদেরকে সুবিধাজনক পার্শ্ববর্তী অফিস ভবনে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। এইক সাথে সুন্দরবনে অবস্থানরত সকল কর্মচারীদের সর্তক থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড