রেজাউল করিম রাসেল, কুমিল্লা
কুমিল্লা ৬৫ বছর বয়সী নানার সাথে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া নাতনীর বিয়ের খবরে পুরো এলাকা চাঞ্চল্যকর অবস্থা বিরাজ করছে।
যানা জায়, ১০ মে রবিবার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড পেরুল গ্রামের দীঘির পাড় বাড়ির শামছুল হক শামু পশ্চিম পেরুল গ্রামের ইমাম হোসেন মেয়ে মরিয়ম আক্তার কে দীর্ঘদিন যাবত প্ররোচনা দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত ভুলিয়ে ৫লক্ষ টাকা দেনমোহর ও ১লক্ষ টাকা উসুল দিয়ে বিয়ে করে।
নাতনী মরিয়ম আক্তার পেরুল উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী, রোল নং- ৩২। স্কুলে যাওয়া আসার সময় মরিয়ম শামছুল হক শামুর রিক্সায় করে যাতায়াত করতেন। তাছাড়া, বর শামছুল হক শামুর ছোট মেয়ে এবং বর্তমান স্ত্রী মোসাম্মৎ মরিয়ম আক্তার একই ক্লাসের ছাত্রী।
বর শামছুল হক শামু দৈনিক অধিকারকে বিয়ের ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন। মরিয়ম আক্তার সম্পর্কে আমার নাতনী। দীর্ঘ দিন দরে তাদের সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক। তাদের বিপদে আপদে আমি সবসময় ছিলাম। আসা যাওয়ার মাধ্যমে আমরা একে অপরকে ভালোবাসি। মরিয়ম আমার রিক্সা করে স্কুলে আসা যাওয়া করত। এই বুড়ো বয়সে আপনি কেন বিয়ে করছেন বলে প্রশ্ন করলে তিনি দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমার বউ অপারেশনের রোগী সংসারে কাজ করতে পারেনা তাই করেছি। তাছাড়া আমরা দুজনের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৫লক্ষ টাকা দেনমোহর ও ১ লক্ষ টাকা উসুলে তাকে আমি বিয়ে করি।
এক লক্ষ টাকা উসুলের মধ্য আমি তাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি কানের জিনিস দেই এবং নগদ ১হাজার ১৫শ টাকা দেই।
মরিয়ম তো আপনার মেয়ের বয়সী অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে তার বয়স ১৪ বছর আপনি কিভাবে বিয়ে করলেন এমন প্রশ্ন করলে বড় শামসু অধিকারকে বলেন, মরিয়মের বয়স ২০ বছর তিন মাস। আপনি চেয়ারম্যান অফিসে যান কম্পিউটারে গিয়ে দেখেন।
আপনি কোথায় কোন কাজী অফিসে বিয়ে করেছেন বলে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কোটে বিয়ে করেছি। কোন কোটে বিয়ে করেছেন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন আর কিছু বলতে পারব না। আমি মূর্খ মানুষ আপনি চেয়ারম্যানের কাছে যান উনি সব বিচার করেছে উনি সব জানে এই কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
বর শামসুল হক শামুর ২ মেয়ে ৪ ছেলে। এর মধ্য ১ ছেলে ১ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে।
এবিষয়ে মরিয়মের বাবা ইমাম হোসেন দৈনিক অধিকারকে জানান, শামসু আমার বাড়ির কাজ করত। আমি ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। আমার পরিবারে বিভিন্ন কাজ সে করে দিত। তাকে আমি খুব বিশ্বাস করতাম। সে আমার মেয়েকে প্ররোচনা দিয়ে বিয়ে করে। সে একজন রিকশাচালক। তার ঘরে স্ত্রী সন্তান রয়েছে। এই বয়স্ক একটা লোকের সাথে আমার মেয়ে কিভাবে সংসার করবে। আমি গরিব বলে কারো কাছে বিচার পাচ্ছি না।
এবিষয়ে পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান সফিকুর রহমান দৈনিক অধিকারকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিয়েটি আইনগত ভাবে হয়েছে। এটি কোন বাল্যবিবাহ নয়। মেয়ের বয়স জন্ম সনদ অনুযায়ী ২০ বছর তিন মাস। আমি ইউনিয়ন পরিষদে তাদেরকে ডেকে সকল কাগজ পত্র দেখেছি। যা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেছি।
এ বিষয় লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসির আরাফাত দৈনিক অধিকারকে বলেন, বিষয়টি আমি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে শুনেছি। মেয়টির জন্ম সনদ ২০০৮ সালের করা। তখন কার সময় এনালগ ছিল। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।
মেয়ের বয়সী মেয়েকে বিয়ে করায় এলাকায় অনেক চাঞ্চল্যকর অবস্থা বিরাজ করছে। জনমনে নানা কথা উঠছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড