• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কৃষাণের অভাবে পাট গাছ নিড়াতে পারছে না কৃষক

  হারুন আনসারী, ফরিদপুর

০৭ মে ২০২০, ১২:১৪
ফরিদপুর
সোনালী আশে ভরপুর মাঠ

দেশে প্রতিবছরই পাটের উৎপাদনে শীর্ষে থাকে ফরিদপুর জেলা। এজন্য এ জেলার ব্রান্ডিং পণ্যও এই পাট। ‘সোনালী আশে ভরপুর, ভালবাসি ফরিদপুর’ এটি হচ্ছে জেলার ব্রান্ডিং শ্লোগান। উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এখানকার কৃষক বংশ পরম্পরায় এই পাটের আবাদ করে আসছেন।

এবছর ফরিদপুরের কৃষকেরা পাটের চারা রোপণের পর শুরুতেই সমস্যায় পড়েছেন। করোনা ভাইরাসের কারণে পাওয়া যাচ্ছে না কৃষক। প্রতিবছর এই সময়টাতে উত্তরবঙ্গ হতে ফরিদপুরে অনেক কৃষাণের সমাগম হয়। তবে এবছর তারা আসতে পারছেন না। ফলে কৃষকও সময়মতো পাট গাছ নিড়াতে পারছেন। এছাড়া এবছর বৈশাখেই তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হওয়ায় পাট গাছে বিছা ও ছাঙ্গা পোকার আক্রমণের মাত্রা বেড়েছে।

ফরিদপুরের জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় ইতিমধ্যে পাট আবাদ হয়েছে প্রায় ৮২ হাজার ৯শ’ ৯৬ হেক্টর জমিতে। পেঁয়াজ তোলার পরপরই গত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝিতে পাটচাষীরা বীজ রোপণ সম্পন্ন করেছেন।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে এবার পাটের ফলন অনেক ভাল হয়েছে। বিশেষ করে এবার বৈশাখের কোমল বৃষ্টিতে পাট গাছগুলি লকলকিয়ে উঠেছে। জেলার বিস্তীর্ণ জমিতে এখন হাটু সমান পাটের চারা শোভা পাচ্ছে। বিভিন্নস্থানে পাট গাছে পোকার আক্রমণও দেখা গেছে।

নগরকান্দার কাইচাইল ইউনিয়নের কৃষক নুরুন্নবী বলেন, এইবার পাটের ভাব খুবই ভাল। এহন জমিতে নিড়ানি দিয়া দরকার। কিন্তু। করোনার কারণে কিষাণ পাইতেছি না। তিনি বলেন, গেছে বার ৩শ’ টাকায় যাগের নিছিলাম তারা এইবার ৬শ’ টাকা চায়। তাও আবার আগাম টাকা দিতে হবি।

ওবায়দুর নামের আরেক কৃষক বলেন, জমিতে নিড়ানি দিতে দেরি হইয়্যা যাইতেছে। পোকা লাইগ্যা পাতা খাইয়্যা ফেলতেছে। তিনি বলেন, সময়মতো জমিতে নিড়ানি না দিলি আলোবাতাস ঢুকে না। গাছ ঘন হইয়্যা যায়। বড়ও হয়না। পরে জমিতে ঢুকতেও কষ্ট হয়।

ইছহাক খন্দকার নামে আরেকজন কৃষক বলেন, এইবার পাট চাষে খরচা বাইর‌্যা যাবেনে। বীজ-সার বাদেও অনেক খরচ। তিনি বলেন, পাট নিড়ানোর পরে আবার বাছ দিতে হয়। তারপর পাট কাটা, জাগ দেয়া, বাছা এইভাবে নানা খরচ। এরপর সার দিতে হয় দুই-তিনবার। আবার পোকার বিষও দিতে হয়।

এবার ভাল পাটের দাম কমপক্ষে আড়াই হাজার টাকা নির্ধারণ ও সারের দাম কমানোর দাবি জানান এসব কৃষক।

ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, একইসাথে সবাই পাট চাষ করায় সবারই গাছের পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। করোনার কারণে এবার তাদের কৃষাণ পেতে সমস্যা হচ্ছে। পাট গাছ ছোট থাকতেই তারা যেনো জমিতে নিড়ানি দেয় সে পরামর্শ দিচ্ছি। তাতে পরবর্তীতে তাদের পাটের পরিচর্যার খরচ কমে যাবে।

বিছা পোকা ও ছ্যাঙ্গা পোকার আক্রমণের ব্যাপারে তিনি বলেন, এই উপদ্রব প্রতিবছরেই কমবেশি লেগে থাকে। এটি পাট গাছের কমন পোকা। এব্যাপারে আমরা কৃষকদের কিভাবে পোকা দমন করা যাবে তার নির্দেশনা দিয়েছি। লিফলেটও বিতরণ করেছি। আমাদের পক্ষ হতে কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড