আতিকুর রহমান, ঝালকাঠি
অভাবের পরিবারে জন্ম, তাই পড়ালেখা ভাগ্যে জোটেনি ডুমুরিয়া গ্রামের পঙ্কজ বড়ালের। বর্তমানে তার বয়স ৫৫ বছর। ১৫বছর বয়স থেকেই কৃষি কাজের মাধ্যমে বাস্তব জীবন শুরু তার। একটু প্রতিষ্ঠিত হবার আশায় অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে উপার্জন করতে শুরু করেন তিনি। ৪৫ বছর বয়সে বিয়ে করলে দেড় বছরের মাথায় ১মাস ১২দিনের একটি পুত্র সন্তান রেখে মারা যান তার স্ত্রী। আরেকটি বিয়ে না কলেই সেই শিশু সন্তানকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন পঙ্কজ বড়াল।
প্রতিবেদককে তিনি জানান, অন্যের জমিতে কাজ করে কিছু টাকা হলে সামান্য কিছু জমি লিজ নিয়ে নিজেই চাষাবাদ শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি ক্রমান্বয়ে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে লিজ নিতে থাকেন। বর্তমানে ডুমুরিয়া গ্রামে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে কাঁদি কেটে বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ করেন তিনি। সেখানে পেয়ারা, আমড়া, লেবু, কলা, কচু, ঝিঙা, ছিচিঙা, পাটশাক, পুঁইশাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন ধরনের কৃষিকাজ করেন তিনি। রাসায়নিক ও জৈবসার দিয়ে আবাদি কৃষিতেও বেশ ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি।
হতাশা প্রকাশ করে তিনি জানান, করুনা ভেনস (করোনা ভাইরাস) এর কারণে উৎপাদিত শাক-সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে না পারায় ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তিনি। স্থানীয়ভাবে রাস্তার পাশে বসে শাক-সবজি আদামে (কমদামে) বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে তার শ্রমের মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না।
পঙ্কজ বড়াল আরো জানান, ১মাস ১২দিনের শিশু সন্তান পলাশ বড়ালকে রেখে স্ত্রী মারা যাবার পরে চরম দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় তাকে। নবজাতকের খাদ্য না পাওয়ায় কান্না করলে প্রথমে কৌটার দুধ ফিটারে করে পরে গরুর দুধ খাওয়ানো হতো। এরপর যখন হাটতে শুরু করে তখন বাসা বাড়িতে রাখলে পানিতে পড়তে পারে এমন চিন্তা শুরু হয়। বিকল্প হিসেবে একটি নৌকায় ভালোকরে বেড়া দিয়ে তারমধ্যে তাকে রেখে লালন-পালন শুরু করি।
পানি শিশুদের প্রধান শত্রু আর সেই শত্রুর সাথে মিতালি করেই পলাশের জীবনে বেড়ে ওঠা। ভীমরুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে পলাশ। ডুমুরিয়া গ্রামের ৩বিঘা জমি লিজ নিয়ে কৃষি আবাদ করার সেখানেই একটি খুপরি ঘরে থাকা-খাওয়াসহ শিশু পুত্র পলাশ বড়ালকে নিয়ে সংগ্রামী জীবন অতিবাহিত করছেন পঙ্কজ বড়াল।
ঝালকাঠির ডুমুরিয়া এলাকার লিজ নেয়া জমিতে কৃষি পরিচর্যা করেন পঙ্কজ বড়াল।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড