মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কবলে আটকে পড়া অনেক শ্রমিক লকডাউন উপেক্ষা করে গ্রামের বাড়ি ফিরছেন। তারা বলছেন, স্থানীয় ভোটার না হওয়ায় তাদের জন্য কোনো ত্রাণের ব্যবস্থা নেই। সেই সাথে করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজ না থাকায় এ সমস্ত শ্রমিকরা পরছেন চরম বিপাকে।
অনাহারে থাকার চেয়ে ঝুঁকি নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেরা তাদের জন্য মঙ্গলজনক বলে মনে করছেন তারা।
রবিবার (৩ মে) রাত নয়টার দিকে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় বাজার এলাকায় দেখা যায় শ্রমিকরা দু’টি ট্রাকে গাদাগাদি করে নিজ গ্রামের বাড়ি ফিরছেন।
শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দিন আনে দিন খান এমন ভাসমান শ্রমিক তারা। গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকার থেকে তারা এখানে পরিবার নিয়ে কাজ করতে এসেছেন । এর মধ্যে অধিকাংশ আলু উত্তোলন করার কাজসহ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। এছাড়া এখানে রিকশাচালক, ভ্যান চালক, দিনমজুর ও বাজারে কুলির কাজের সাথেও সম্পর্কিত শ্রমিকরাও ছিলেন। হঠাৎ করে করোনার আগ্রাসনে কর্মহীন হয়ে পড়েন তারা। করোনা থেকে বাঁচতে ঘরে থাকার নির্দেশনা সরকারের। কিন্তু মুন্সীগঞ্জে থাকা এসব ভাসমান শ্রমিক নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই এ জেলা ছেড়ে নিজ গ্রামের দিকে ছুটছেন।
স্থানীয় ও ভাসমান শ্রমিকদের সাথে কথা বলে আরো জানাযায়, তারা রয়েছে এখন করুণ অবস্থায়। জীবিকার তাগিদে আসা শ্রমিকরা খাবার পাচ্ছেনা। করোনার গ্রাস থেকে বাঁচতে ঘরে থাকা প্রয়োজন জানলেও ক্ষুধার তাগিদে তাদের বেরিয়ে আসতে হচ্ছে। কেউবা পরিবার নিয়ে ছুটে যেতে চাচ্ছেন নিজ গ্রামে। সরকার জন-প্রতিনিধিদের ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার কথা বললেও এ সমস্ত ভাসমান শ্রমিকদের এ অঞ্চলে বাড়ি না হওয়ায় তারা ত্রাণ পাচ্ছেনা বলে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের অভিযোগ।
ভুক্তভোগীরা আরো জানান, বিভিন্ন এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছেন। তবে সেই ত্রাণ দিচ্ছেন তারা ভোটার আইডি কার্ড দেখে দেখে। অর্থাৎ ওই এলাকার ভোটার নন এমন কেউ ত্রাণ পাওয়ার আওতায় আসছেন না। যার ফলে চরম বেকায়দায় পড়েছে এসব ভাসমান শ্রমিকরা। একদিকে হুট করে করোনা গ্রাস করায় হাতে নেই কোন সঞ্চয়। লকডাউন ভেঙে পরিবার নিয়ে গ্রামেও ছুটে যেতে মনের ভীতরে ভয় কাজ করলেও ঝুঁকি ও ভয়ভীতি নিয়ে গ্রামের পথে বাধ্য হয়ে ছুটে চলছেন এ সমস্ত শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা আক্তার জানান, ভাসমান শ্রমিকদের কয়েকবার উপজেলা হতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যখনি তাদের তালিকা দেওয়া হচ্ছে আমরা বরাদ্দ দিচ্ছি। এখন এ সমস্ত শ্রমিকরা যদি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা যে কোন উপায়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ না করে তবে আমরা কিভাবে জানবো যে তারা সাহায্য পাচ্ছেনা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড