• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ত্রাণ চাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের কাণ্ড!

  নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ এপ্রিল ২০২০, ২৩:২৩
কুমিল্লা
ভুক্তভোগী যুবক আশেকে এলাহী, ইনসেটে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাকীম

অসহায়দের জন্য ত্রাণ চাওয়ায় চৌকিদার দিয়ে যুবককে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১১ এপ্রিল) কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ১০নং দক্ষিণ গনাইঘর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী আশেকে এলাহী জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় ১১০ জনকে ত্রাণ সামগ্রী দিয়েছেন। এরপর স্থানীয় আরও অনেকে তার আছে আসলে তিনি তাদের ত্রাণ সামগ্রী দিতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের আব্দুল হাকিম খাঁনকে অনুরোধ জানান।

আশেকে এলাহীর অভিযোগ, চলমান সাধারণ ছুটিতে কর্মহীন হয়ে পড়া ৫৯ জনের একটি তালিকা নিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে গেলে চেয়ারম্যান তার সঙ্গে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করেন।

আশেকে এলাহীর ভাষায়, ‘তালিকা নিয়ে চৌকিদাররে দেখাইলাম। সে বলে সে কিছু করতে পারবে না। মেম্বারের কাছে গেলাম। সে বলে চেয়ারম্যানের কাছে যাইতে। চেয়ারম্যানের কাছে যাওয়ার পর সে আমার সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করছে। আমারে বলে আমি কি চেয়ারম্যান হমু নাকি, এমপি হমু নাকি। আমার এতো দরদ ক্যান।

চেয়ারম্যান ত্রাণ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি তালিকা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছেও যান। বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করলে চারজন চৌকিদার দিয়ে আশেকে এলাহীকে তুলে আনতে পাঠান চেয়ারম্যান আব্দুল হাকীম।

এলাহী বলেন, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে চেয়ারম্যান আমার বাসায় চারজন চৌকিদার পাঠায়। তারা আইসা আমাকে বলে যাদের তালিকা দিয়েছি। তাদের ত্রাণ দিবে। চেয়ারম্যান আমাকে ডেকেছে। আমি তাদেরকে তালিকা নিয়ে যেতে বললে তারা আমাকে যেতে হবে বলে জানায়। পরে আমি চেয়ারম্যানকে ফোন করি। তিনি আমাকে যেতে বলেন। ফোন চৌকিদারদের দিলে তিনি আমার সামনে চৌকিদারদের বলেন, আমার যেন পা মাটিতে না পরে সেভাবে তুলে নিয়ে যেতে।

পরিস্থিতি দেখে স্থানীয়রাও তার সঙ্গে চেয়ারম্যানের কাছে যান। বাড়ি থেকে নিয়ে একটি ঘরে বন্ধ করে তাকে দফায় দফায় তিন বার মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এই যুবক।

তিনি জানান, স্থানীয়দের সহযোগিতায় এবং ফেসবুকে চেয়ারম্যানের পক্ষে ভিডিও বার্তা দেয়ার পর বিকেলে চারটায় তাকে সেখান থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। একই সঙ্গে পরবর্তীতে এবিষয়ে কোনো সক্রীয়তা দেখালে তার বিরুদ্ধে পঞ্চাশটির বেশি মামলা করার হুমকী দেন চেয়ারম্যান। তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মারধরের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান আব্দুল হাকীম। চেয়ারম্যানের ভাষ্য অনুযায়ী, সেখানে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

আব্দুল হাকীম বলেন, ‘আমি তাকে কেন মারব, সে আমার ভাতিজা। আমি তাকে কোনো মারধর করিনি।‘ ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তার বিরুদ্ধে কেন পঞ্চাশটা মামলা করব? পঞ্চাশটা মামলা করতে আমার পঞ্চাশ টাকা হলেও খরচ হবে। আমি কেন তার পেছনে টাকা খরচ করতে যাব।

আশেকে এলাহী যে তালিকা নিয়ে ত্রাণের জন্য আবেদন করেছিল, সে সব ব্যক্তি ও পরিবার ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান জানান, তালিকায় থাকা সবাই ত্রাণ পাওয়ার যোগ্য।

তবে, আশেকে এলাহীর করা তালিকার প্রায় অর্ধেক নাম চেয়ারম্যানের তালিকায় রয়েছে। বাকীরা বিভিন্ন ধরণের ভাতা পান বলে তাদের নাম তালিকায় রাখা হয়নি।

বলেন, ‘আমরা ত্রাণ দেয়ার জন্য পুরো ইউনিয়ন থেকে চারজনের একটা তালিকা করছি। সে এক বাড়ি থেকে এতো জনের নাম আনলে হবে নাকি? আমাদেরকে বলা আছে, যারা বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা পায় তারা করোনা ভাইরাসের চাউল পাবে না।

একজন ব্যক্তি কত টাকা বয়স্ক ভাতা পান? ঢাকা টাইমসের এমন প্রশ্নের জবাব দিতে পাশের ব্যক্তিদের কাছে প্রশ্ন করতে হয়েছে চেয়ারম্যান আব্দুল হাকীমকে।

জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাকীম চলাফেরা করেন দামি প্রাডো গাড়িতে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড