নন্দীগ্রাম প্রতিনিধি, বগুড়া
গ্রামগঞ্জে সাপ্তাহিক হাট একটি সাধারণ বিষয়। শাক-সবজি, খাবারদাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানিরা। হাটুরেরা আসে বিভিন্ন গ্রাম থেকে। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সারাবিশ্ব যখন ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি তখন এ হাট বড়ই বেমানান।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বগুড়ার নন্দীগ্রামে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বসছে হাট। তবে সে হাটের চিত্র একটু অন্য রকম। এ হাট সূর্যালোক ছড়াতেই শুরু হয়। আবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই শেষ হয়। তাকে কি, কমতি ছিলনা জনসমাগম। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই হাটে আসে হাটুরেরা। করোনা ও পুলিশের ভয়ে দ্রুত হাট-বাজার শেষ করেন হাটে আসা লোকজন। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে উপজেলাবাসী।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, ভোরের আযানের পূর্বের হাটে দোকান বসানো হয়। সকাল হতে হতেই বেচা-কেনা শেষ করে বাড়ি ফিরতে হবে। করোনার কারণে হাট বসা নিষেধ আছে, তাই এভাবেই কেনা-বেচা করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরাও করোনাকে ভয় পাই, কিন্তু আমরা দোকান না বসালে আপনারা খাবেন কি? আমরা নিজের পেটের ও পরিবারের কথা ভেবে দোকান নিয়ে হাটে এসেছি।
প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা জারি, জনসচেতনতা মূলক প্রচারণা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করার পরেও সচেতন হচ্ছেন না জনসাধারণ। নন্দীগ্রাম পৌর শহরের সাপ্তাহিক হাট বসে প্রতি মঙ্গলবার। এ হাট চলে সারাদিন। সেই ধারাবাহিকতায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাপ্তাহিক হাট বসলেও ভোর থেকে শুরু হয় কেনা-বেচা। আর সূর্যোদয়ের পর পরই শেষ হয় হাট। অল্প এ সময়ের মধ্য হাটে উপচে পড়া ভিড় ছিল। ব্যবসায়ীরা হরেক রকম পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল মানুষ। ছিলনা কোন সামাজিক দূরত্ব। যা দেখে মনে হয় এদেশে করোনাভাইরাসের কোন বালাই নেই।
হাটে আসা এক ব্যক্তি জানান, হাট না করলে পরিবার নিয়ে খাব কি। আমরা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ, আমাদের তো আর এক মাসের বাজার এক সাথে করার টাকা নেই। আলু বিক্রি করতে আসা ঠান্ডু নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, হাটে আসা নিষেধ এটা জানি। কিন্তু কি করবো। টাকার প্রয়োজন, তাই শত বিপদের মাঝেও হাটে এসেছি।
এদিকে গত মঙ্গলবার সাপ্তাহিক হাট বসানো হলে উপজেলা প্রশাসন ওই হাট ভেঙে দেয়। এরপর পৌরসভার পক্ষ থেকে সাপ্তাহিক হাট বন্ধ রাখতে মাইকিং করা হয়। তারপরেও বন্ধ হচ্ছে না হাট।
এবিষয়ে পৌরসভার মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল জানান, জনসাধারণকে এত বলার পরেও তারা সচেতন না হলে কি করার আছে আমাদের। পৌর শহরে হাট-বাজার না বসানো, জনসমাগম ও বিনা প্রয়োজনে বাহিরে না থাকা এবং সবাইকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করার জন্য প্রতিদিন মাইকিং চলছে। এছাড়াও আমি নিজে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তাদের সচেতন হয়ে নিজ নিজ ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ করছি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড