বগুড়া প্রতিনিধি
জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকা থেকে রংপুরে যাওয়ার পথে বগুড়ায় বাসস্ট্যান্ডে ফেলে যাওয়া সেই ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে নিশ্চিত করেছে বগুড়ার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত (৫০) ওই ব্যক্তি ঢাকার কাওরান বাজারের সোনামিয়া নামের এক ব্যক্তির আড়তে রাতে ঘুমাতো। ধারণা করা হচ্ছে এই আড়ত থেকেই সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এদিকে বগুড়ায় আরো এক মহিলার শরীরে করেনা ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়ায় ৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন কেন্দ্রে, এখন মোট চিকিৎসাধীন রয়েছে ৬জন। গত শনিবার বিকালে আইসোলেশন কেন্দ্রে শাজাহানপুর উপজেলার চককানপাড়া এলাকার এক মহিলা (৩২) করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়ার পর ওই মহিলার আশপাশের ৪টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
গত পাঁচদিনে এই কেন্দ্রে মোট ৯ জন ভর্তি হলে ৩জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। বাকিদের চিকিৎসা চলছে। এছাড়া আইসোলেশনে মারা যাওয়া গাবতলী উপজেলার ১৩ বছরের শিশুটি করোনায় আক্রান্ত ছিল না বলে আইইডিসিআর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম নুরুজ্জামান বলেন, আইসোলেশনে ভর্তি রংপুরের ওই ব্যক্তির দেহে করোনার উপস্থিতি মিলেছে। ঢাকার রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে বিষয়টি তাঁদের নিশ্চিত করা হয়েছে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ ভোরে বগুড়ার মহাস্থান বাসস্ট্যান্ডের কাছে জ্বর, কাশির কারণে ট্রাক থেকে ফেলে যাওয়া হয়েছিলো। তারপরে তার নমুনা সংগ্রহ করে ৪ এপ্রিল রাতে ঢাকার আইইডিসিআর থেকে তার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। তিনি বর্তমানে বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন আছেন। তার সবকিছুই আলাদা করে চিকিৎসা চলছে। ওই ব্যক্তির সংস্পর্শ আসা শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের প্রধানসহ পাঁচজন চিকিৎসক, আটজন নার্সসহ মোট ১৬ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলমগীর কবির বলেন, ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় মহাস্থান থেকে যেসব ব্যক্তি তাঁর সংস্পর্শে এসেছেন, তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।
বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সামির হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তি দেহে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ ছিল। সন্দেহ থাকায় শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের মাধ্যমে আইইডিসিআর কিংবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আরএমও শফিক আমিন কাজল জানান, ঢাকার কাওরান বাজারের সোনামিয়া নামের এক ব্যক্তির আড়তে রাতে ঘুমাতো। ধারণা করা হচ্ছে এই আড়ত থেকেই সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। তার একটা হাত প্যারালাইজড। অন্য হাতে দিনমজুর করে খেতো।
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক সোহরাব হোসেন ছান্নু জানান, ৩২ বছরের এক মহিলা করেনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ কারণে স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ ক্রমে আপাতত ওই এলাকার ৪টি বাড়ি নকডাউন করে রাখা হয়েছে। তাদের খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড