পঞ্চগড় প্রতিনিধি
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলছে অঘোষিত লকডাউন। শহরের মত গ্রামের মানুষগুলোও এখন ঘরবন্দি, রাস্তাঘাট ফাঁকা। হাতে কাজকর্মও নেই। বাড়ি বসে কাটানো এই নিম্নআয়ের মানুষগুলো পড়েছেন মহা সংকটে। তাদের কাছে এখন করোনার চেয়ে কিভাবে নিজে ও পরিবারের মানুষ খেয়ে বাঁচবে সেই আতঙ্ক কাজ করছে।
জেলার প্রায় কয়েক লক্ষাধিক শ্রমিকের ঘরে খাবার নেই। তাদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা শহর এলাকার দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিলেও এখনো গ্রামের মানুষের খোঁজ নেয়নি। তবে প্রশাসন থেকে বলা হচ্ছে, গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে জেলার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় তেঁতুলিয়া উপজেলার লক্ষাধিক দরিদ্র মানুষ। এই উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর বন্ধ হয়ে গেছে। চা শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়েছেন। কৃষি শ্রমিক এবং পাথর শ্রমিকরাও মহা সংকটের মুখোমুখি।
অপরদিকে হোটেল-রেস্তোরা বন্ধ হওয়ায় খাবারের সংকটে পড়েছে পথে জীবন যাপন করা মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলো। যারা স্থানীয় এই হোটেল-রেস্তোরা থেকে খাবার সংগ্রহ করতো।
উপজেলার ভজনপুর এলাকার ডিমাগজ গ্রামের শামসুল হক সরকার জানান, কাজ কাম নেই। খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে গ্রামে। ডাক্তার পাড়া গ্রামের নজিবুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন কাজ করে যা পেতাম তাই দিয়ে সংসার চলতো। এখন কোনো কাজ নাই। যে টাকা জমা করেছিলাম তা শেষ। এখন প্রায় না খেয়ে থাকার অবস্থা।
তবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের তালিকা তৈরির কাজে জনপ্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্টতাকে অনেকে সন্দেহ করছেন। নিজস্ব ভোটারের নাম দিয়ে তালিকা করতে পারেন বলে তাদের আশঙ্কা।
তেঁতুলিয়া উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী জানান, প্রায় হাজার হাজার পাথর শ্রমিক এখন বেকার। কর্মহীন এই শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে দিন পার করছে। উপজেলা পরিষদ থেকে কিছু সংখ্যক শ্রমিককে সহযোগিতা করা হয়েছে। তবে জরুরী ভিত্তিতে আরও সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দ প্রয়োজন। তিনি শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুদুল হক জানান, পঞ্চগড় জেলায় সবচেয়ে বেশি বেকার হয়ে পড়েছে এই উপজেলার মানুষ। কারণ এই এলাকায় অধিকাংশ মানুষ চা, পাথর শিল্প সংশ্লিষ্ট এবং বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরের নানা কাজে জড়িত। করোনা ভাইরাসের কারণে তারা এখন সম্পূর্ণ বেকার। এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ ত্রাণ পাওয়া গেছে তা অপ্রতুল। আমরা ইতিমধ্যে তালিকা তৈরির কাজে হাত দিয়েছি। সরকারের পাশাপাশি দরিদ্র মানুষের খাদ্য সহযোগিতায় দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর এবং তেঁতুলিয়ার পাথর শ্রমিকদের সহায়তা করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদেরকে তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলেই তারা সহায়তা পাবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড